‘রাজা ম্যানশন’র জমিদার মিথ্যা বলেছেন, মার্কেটটি রেক্টোফিটিং করে স্থায়িত্ব বাড়ানো সম্ভব’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুলাই ২০২১, ১:০৩:১২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক : সিলেট শহরের জিন্দাবাজারের ‘রাজা ম্যানশন’ নিয়ে ভবন মালিক মিথ্যাচার করেছেন। তিনিদ আলোচনা না করেই সংবাদ সম্মেলন করে মার্কেট খালি করার নির্দেশনা দিচ্ছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং তা ভেঙে ফেলার প্রয়োজন নেই বলে দাবি করেছেন দোকান মালিকরা।
বুধবার ৩০ জুন নগরের একটি হোটেলে আয়োজিত পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রাজা ম্যানশন দোকান মালিক সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক উল্লেখ করেন, মার্কেটের মূল মালিক দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরীর কাছ থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত দোকানকোঠা বিভিন্ন সময়ে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত নেওয়া হয়। ৪০-৪৫ বছর ধরে সেখানে ব্যবসা করে আসছেন পুস্তকসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য ট্যাক্স পরিশোধও করে আসছেন। সম্প্রতি মার্কেটের উত্তরাধিকার দেওয়ান শমশের রাজা চৌধুরী, দেওয়ান শাহীন রাজা চৌধুরী ও দেওয়ান শাহবাজ রাজা চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বিভ্রান্তি ছড়ান। তারা কোনো আলোচনা না করেই মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে খালি করা ও সেখানে আধুনিক বিপনীবিতান করার ঘোষণা দেন। অথচ ২০১৬ সালের একটি নোটিশে অনুমান করে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছিল। সম্প্রতি ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন জরিপ ও পরীক্ষা করে প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ভবনটি রেক্টোফিটিং করে এর স্থায়িত্ব বাড়ানো যাবে। সয়েল টেস্টের পরীক্ষাও মার্কেটের অনুকূলে।
সংবাদ সম্মেলনে দোকান মালিকরা জানান, রাজা ম্যানশন ভেঙে আধুনিক মার্কেট করতে তাদের আপত্তি নেই। কিন্ত তার আগে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এ নিয়ে চুক্তি করতে হবে। হঠাৎ করে ভবন ভাঙতে চাইলে ব্যবসায়ীরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
গত ২১ ও ৩০ মে সিলেটে একাধিকবার ভূমিকম্পের পর সিটি করপোরেশন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয় উল্লেখ করে দোকান মালিকরা জানান, সিটি মেয়রের চিঠির প্রেক্ষিতে ভবনটি সংস্কার করা হচ্ছে। বন্দোবস্ত দলিলের ৫ নম্বর ধারায়ও ছোটখাটো সংস্কার করার অধিকার তাদের রয়েছে। অথচ জমিদার ভবনটি সংস্কার উপযোগী নয় দাবি করে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন। একবারও তিনি বিষয়টি বন্দোবস্ত গ্রহিতাদের অবগত করেননি। এমনকি ভেঙে ফেলার পেছনে জমিদার কোনো প্রকৌশলীর মতামত দেখাতে পারেননি। গত ১০ জুন সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী সরেজমিনে পরিদর্শন করে রেক্টোফিটিং এর মাধ্যমে সংস্কার করা সম্ভব বলে মতামত প্রদান করেন।
মার্কেটের ১৮৭টি দোকানের বিপরীতে জমিদার মাত্র ৫০ হাজার টাকা ভাড়া পান এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে দোকান মালিকরা জানান, স্থায়ী বন্দোবস্ত গ্রহিতারা নামমাত্র জমিদারি দেন। এটা সিলেটের অন্য মার্কেটেরও নিয়ম। ১০ বছর পর সেই জমিদারি ভাড়া ২৫ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়। সে অনুযায়ী জমিদার ভাড়া পাচ্ছেন। কেউ কোনো ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছেন না।
দোকান মালিকরা জমিদারদের মিথ্যাচার বন্ধ ও নানা অপকৌলের আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে উল্লেখ করেন, রাজ্য ম্যানশনের উত্তরাধিকারের অসহযোগিতার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার তাদেরকেই নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, দোকান মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান সম্পাদক মনির উদ্দিন চৌধুরী, মো. আবুল বশর, শাহ মো. মতছির আলী, মাহবুবুল আলম মিলন, গুলজার আহমদ, তৈয়বুর রহমান নানু, মাসুদ হোসেন খান, তানভীর হোসেন রহিম প্রমুখ।