মোহাম্মদ জায়েদ আলী-র দুটি কবিতা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মে ২০২৫, ১:১৮:১৪ অপরাহ্ন

গাজায় মৃত শিশুর ভর্ৎসনা
মুখে ভাষা ফোটার আগেই আমি চিরবোবা হয়েছি!
তোমাদের সমস্ত আবিষ্কার আর
সমস্ত শিল্প-সাহিত্যের অহংকার
আজ আমার কাছে কেবলই উন্মাদনা—অসার!
আমার মাতৃজঠর পেরিয়ে তোমাদের এই ধরায় এসেছিলাম।
দেখেছি গভীর তমসাচ্ছন্ন তোমাদের জগৎ,
দেখেছি তোমাদের মতো বর্বরদের আশ্চর্য মৌনতা,
দেখেছি মানবতা তোমাদের অস্থিসার, নগ্ন, নপুংসক।
প্রাণ বিকশিত হবার আগেই নিষ্প্রাণ হয়েছি!
জানিনি কেন আমার ক্ষুদ্র শরীরে পড়ল এত ভারী বোমা,
জানিনি কেন আমার অবুঝ অস্তিত্বে এত গুরুদণ্ড,
মরে গিয়ে জেনেছি তোমরা কতটা ভণ্ড!
আজ জায়োনিস্ট শকুনেরা
আরব-কাকেদের সাথে মিলেমিশে ভোজন করে
আমাদেরই নিরীহ রক্তমাংস!
♣ ♣
বৈশাখের গান
পেছনে ফেলে জরাজীর্ণ বৈশাখ আসে ধীরে,
প্রখর তেজে গুণগুনিয়ে বাতাসও ওঠে গেয়ে।
কালবৈশাখী আসে রুদ্ররূপে আসন্ন সন্ধ্যায়,
আকাশজুড়ে মেঘে মেঘে বিদ্যুৎ চমকায়।
উতাল-পাতাল ঝড় নাচে উন্মাদিনীর বেশে,
দিশেহারা জীবজগৎ লুকায় প্রবল ত্রাসে।
শ্রান্ত তুফান থামে তবু। মেঘেরা কোথাও পালায়।
আলো ফোটে, ভয় টুটে, প্রাণ আসে ধরায়।
ধ্বংসযজ্ঞ নিদ্রা গেলে জেগে ওঠে সজীব প্রাণ,
বাতাস যেন গুনগুনিয়ে আবার তোলে ঐকতান।
সর্বহারা পাখিরা ফিরে আপন নীড়ে নবোদ্যমে,
মাটি ফুঁড়ে কচিতরু দেখে সব বিচিত্র নয়নে।
সৃষ্টির যত আলোড়ন, ঘটে মৃত্তিকার মাতৃকোলে,
রূপকথার মতো আশ্চর্য রূপ প্রকৃতি দেখায় মেলে।
হাসিমুখে তাল মেলায় মন্ত্রমুগ্ধ সরল চাষা,
গার্হস্থ্যসুখের কল্পডানায় ভেসে বেড়ায় শত আশা।




