ইমতেহান ছাত্র কল্যাণ পরিষদের যুগপূর্তি অনুষ্ঠান ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া হিফজুল কুরআন মাদরাসায় ২০ ফেব্রুয়ারি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭:১৭ অপরাহ্ন
ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া হিফজুল কুরআন মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবান্ধব ও সামাজিক সংগঠন আল-ইমতেহান ছাত্র কল্যাণ পরিষদের এক যুগপূর্তি ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে ২০ ফেব্রুয়ারি (২০২৫) বৃহস্পতিবার ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া হিফজুল কুরআন মাদরাসা পাঠানটিলা, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেটে যুগপূর্তি অনুষ্ঠান হবে।
দিনটিতে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিতব্য এ আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম। প্রধান আলোচক থাকবেন দারুস সুন্নাহ লতিফিয়া মাদরাসা, আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা হাফিজ আবু আব্দিল্লাহ্ মো. আইনুল হুদা।
বিশেষ অতিথি থাকবেন কবি কালাম আজাদ—অধ্যক্ষ, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ; মাওলানা হাফিজ আব্দুল ওহাব—অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদরাসা; মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী—জয়েন্ট সেক্রেটারি, ইয়াকুবিয়া হিফজুল কুরআন বোর্ড; হেদায়াতুল্লাহ আল হাদী—সহকারী অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট; মাওলানা মো. মাহবুব কামাল—হেড অফ দ্যা ইসলামিক স্টাডিজ, ব্রিটিশ মুসলিম স্কুল, ইউকে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আল-ইমতেহান ছাত্র কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা মাও. আবু সাঈদ মো. সেলিম
এ তথ্য জানিয়েছেন।
“গড়বো মোরা সোনালী সমাজ, দেখাবো মোরা আলোর পথ, মানবতা হোক মহামহিয়ান, নিত্য মোদের এই শপথ।” স্লোগানে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটির এ আয়োজনের বিশেষ আকর্ষণ থাকবে শতাধিক এতিম শিক্ষার্থীকে নগদ অনুদান ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হবে।
এতে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় গীতিকার ও সুরকার আহমদ আব্দুল্লাহ কলরব, গোল্ডেন ভয়েজ খ্যাত জনপ্রিয় নাশীদ শিল্পী, আবু উবায়দা কিশোরগঞ্জ, জনপ্রিয় আরবি ও উর্দু নাশীদ শিল্পী মাহমুদ হুজায়ফা ঢাকা,আবদার খ্যাত জনপ্রিয় শিল্পী মাহমুদ আব্দুল কাদির মোস্তফা আহমদ, মামুনুর রহমান—আল-ইমতেহান শিল্পীগোষ্ঠী।
আল ইমতেহান ছাত্রকল্যাণ পরিষদ পরিচিতি
মাও. আবু সাঈদ মো. সেলিম: আল ইমতেহান ছাত্রকল্যাণ পরিষদ মূলত: ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মাদিয়া হিফজুল কুরআন মাদরাসার সাবেক ছাত্রদের শিক্ষাবান্ধব ও সামাজিক সংগঠন।
ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদরাসার অন্যতম অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মাদিয়া হিফজুল কুরআন মাদরাসা ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি কুরআানে পাকের খিদমতে যাত্রা শুরু করলেও গতানুগতিক ভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল ২০০৯ সাল পর্যন্ত। অতঃপর ২০০৯ সালের শেষ দিকে কোন এক
সোনালী প্রভাতে এ প্রতিষ্ঠানকে আবাসিক ব্যবস্থাসহ আধুনিকায়ন করে নতুন আঙ্গীকে শুরু করার জন্য মাদরাসা পরিচালনা কমিটি ও এলাকার নিবেদিত প্রাণ কিছু ব্যক্তিবর্গ গ্রহণ করেন এক যুগান্তকারী প্রদক্ষেপ। সাথে সাথে আমারও চাকুরি জীবনের তথা মহান কালামে পাকের খিদমতের শুভ সুচনা হয় তখন থেকেই। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়ায় নতুন উদ্যোমে, সম্ভাননার নতুন এক অধ্যায় নিয়ে । হিফজের পাশাপাশি একাডেমিক শিক্ষা সংযোজন, আন্তর্জাতিক মানের তিলাওয়াত, সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চ, প্রয়োজনীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ ও বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী করে গড়ে তোলার সময়োপযোগী ও বাস্তবধর্মী সিদ্ধান গ্রহনে প্রতিষ্ঠানটি তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য একধাপ এগিয়ে যায়। উন্মোচিত হয় সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত।
এরই ফলশ্রুতিতে মাত্র ৩-৪ বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি জন্ম দেয় প্রায় দেড় শতাধিক হাফিজে কুরআন। এ সফলতা একদিকে আমাকে যেমন উৎসাহ যোগায় তেমনি অপরদিকে স্বপ্ন দেখাতে অনুপ্রাণিত করে।
তখন থেকেই হাফিজে কুরআনদের নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করি এবং কিভাবে এদেরকে সমাজ, দেশ ও জাতি তথা দ্বীনের কল্যানে নিবেদিত করা যায়, এ চিন্তাভাবনা ও প্রত্যয় থেকেই সিদ্ধান্ত নিই ২০১৩ সালের সূচনালগ্নে ‘আল ইমতেহান ছাত্র কল্যাণ পরিষদ’ নামক শিক্ষাবান্ধব ও সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার। এ সংগঠনের সদস্যরা মূলত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, বুকে ধারণকারী হাফিজে কুরআনদের সংগঠন। আমাদের সমাজব্যবস্থা আর রাষ্ট্র ব্যাবস্থা যাই বলেন না কেন, সর্বত্র অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি এমনকি কোথাও মানুষের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নেই। ধর্মীয় ও মৌলিক অধিকার এককথায় সবখানেই অপরাধের এক মহাসমারোহ চলছে। অথচ মানুষ এ থেকে মুক্তি পেতে চায়।
সুতরাং অমাবস্যার এ আঁধার থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হলে প্রয়োজন একঝাঁক মেধাবী, আদর্শ ও যোগ্য তরুন সমাজ। যারা মানুষকে আলোর পথ দেখাবে। সমাজে প্রতিষ্ঠা করবে সাম্য, ন্যায় এবং ইনসাফ। অসহায় মানুষের পাশে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
তবেই মানুষ ফিরে পাবে প্রকৃত স্বাধীনতা, ধর্মীয় ও মৌলিক অধিকার। সমাজ ও রাষ্ট্রে এসবের বাস্তব প্রতিফলনের জন্য যেসকল তরুণদের প্রয়োজন ‘আল ইমতেহান ছাত্রকল্যাণ পরিষদ’ এর সম্ভাবনাময় তরুণ হাফেজে কুরআনদের মধ্যে আমি তা খুঁজে পেয়েছি। সুতরাং এ মুহুর্তে খুবই প্রয়োজন তাদের দিকে সহায়তার হাত প্রসারিত করা। তবেই তারা সমাজ, দেশ ও জাতীর জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে সক্ষম হবে, পারবে তরুণ ছাত্র সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে। একদিকে তারা আর্থ মানবতার পক্ষে সমাজ ও জাতীর জন্য কাজ করবে, অপরদিকে জাতীর দুর্দিনে শিশাঢালা প্রাচীরের মতো জাতীকে রক্ষার কাজে মরণপণ যুদ্ধ করবে। সুতরাং আমরা আগামী দিনে জাতীর জন্য এরকম কিছু গর্বিত মানুষের প্রত্যাশা করছি। এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠালব্ধ থেকে এযাবৎকাল পর্যন্ত শিক্ষায় উন্নয়ন , বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আর্থ মানবতার কল্যাণ, বিশেষত: এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে।
পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজ পরিবর্তনের এ মহা মিছিলে ‘আল ইমতেহান ছাত্রকল্যাণ পরিষদ’ একটি দূর্জয় কাফেলা। অতএব, আল্লাহর দ্বীন ও রাসুলে পাক (সা.) এর অনুপম আদর্শ প্রতিষ্ঠা হোক ‘আল ইমতেহান ছাত্রকল্যাণ পরিষদ’ এর শেষ প্রত্যয়।




