মৌলভীবাজারে মনু নদীর বাঁধ সংস্কার নিয়ে ত্রিপুরায় উদ্বেগ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ২:১৮:০৪ অপরাহ্ন
সালেহ আহমদ (স’লিপক): ভারত থেকে প্রবাহিত মৌলভীবাজার জেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া মনু নদীর একটি বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে, যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ভারত- বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলে মনু নদীর বাঁধ এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন ত্রিপুরা রাজ্যের ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা।
ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা বলেছেন, তিনি দেখে এসেছেন বাংলাদেশের তরফে মনু নদী বরাবর সীমান্তের জিরো-লাইনের কাছে মাটি ফেলা হয়েছে বাঁধ উঁচু করার জন্য। তবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফে বিবিসিকে জানানো হয়েছে, তারা শুধু বাংলাদেশের অংশে বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছেন।
এই বিষয়টি গত সপ্তাহে ত্রিপুরার বিধানসভায় তুলেছিলেন সীমান্ত সংলগ্ন কৈলাসহর থেকে নির্বাচিত বিধানসভা সদস্য বীরজিত সিনহা। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশ তাদের অংশে মনু নদীর বাঁধ সংস্কার এবং উচ্চতা বাড়ানোর কাজ চালাচ্ছে এবং এর ফলে তার এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দেবে। এই বাঁধ দু’টি অবশ্য নদীর মাঝ বরাবর যে ড্যাম বা ব্যারাজ বানানো হয়, সেরকম নয়, নদী-পাড়ের ভাঙ্গন আটকাতে দেওয়া হয়েছে এই বাঁধ।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অবশ্য বিবিসিকে এও জানিয়েছেন যে, তাদের অংশের বাঁধ সংস্কার এবং উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে কৈলাশহর ডুবে যাবে, এই আশঙ্কা অমূলক।
ত্রিপুরার বিধায়ক ও মন্ত্রীর উদ্বেগ নিয়ে বিবিসি বাংলা যোগাযোগ করেছিল বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহম্মদ খালেদ বিন অলীদ বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভারতের কৈলাশহর ডুবে যাবে, এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই বলে আমি মনে করি। তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, মনু নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজ ‘চলমান রয়েছে’। তিনি বলেন, বাঁধটি আগে থেকেই ছিল। কিছু জায়গায় উঁচু নিচু ছিল। ডিজাইন অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় একেক লেভেলে, যতটুকু দরকার ততটুকু করছি। আবার তিনটা পয়েন্টে উনাদের বাঁধার জন্য আমরা কাজ করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বিএসএফ কয়েকটি জায়গায় তাদের বাঁধ সংস্কারের কাজ করার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে। সেই জায়গাগুলিতে তারা কাজ করতে পারেন নি। সীমান্ত অংশে কাজ বন্ধ রেখেছি আমরা। তবে যে জায়গাগুলিতে কাজ হচ্ছে, সেটা তো বাংলাদেশের অংশ।
নদী ভাঙ্গন রোধে বাঁধ সংস্কার জরুরি বলে মন্তব্য করে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অলীদ আরো বলেন, মনু নদীতে যে বাঁধ রয়েছে, সেটা নদীর প্রবাহ আটকানোর জন্য নয়, নদীর ভাঙ্গন রোধ করার জন্য। এটাতো নদীর ভিতর দিয়ে বাঁধ নয়, নদী বরাবর বাঁধ। নদীর পানি যেন শহরে না ঢোকে, সেজন্য এই বাঁধ। ভারতের দিকেও তো বাঁধ আছে। আমাদের অংশটায় কার্ভ আছে, তাই আমাদের অংশটা ভাঙ্গছে। আমাদের ল্যান্ডটাকে রক্ষা করব না আমরা? বাড়ি ঘরও আছে। ওদের শহর ডোবার কোনও সম্ভাবনাই নেই, টেকনিক্যালি এই কথার কোনও ভিত্তি নেই। কৈলাশহর ডুবে যাবে, এমন আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, কৈলাশহরের কিছুই হবে না। সেটা তো অনেক উঁচুতে। বরং সমস্যা হলে সেটা হবে আমাদের দিকে, আমরা তো ভাটিতে।