মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ‘ডব্লিউসিএস বিডি’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২:২৩:৪৮ অপরাহ্ন
ইসমাইল হোসেন স্বপন: বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সার একটি ভয়াবহ রোগ হিসেবে পরিচিত, যা প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। বাংলাদেশেও ক্যান্সারের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি ও আক্রান্ত রোগীদের সহায়তা করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ।
ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ ক্যান্সার আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা, পরামর্শ, এবং কাউন্সেলিং সেবা প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে তুলতে কাজ করছে। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের যারা ক্যান্সার আক্রান্ত তাদের বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদান করে সংগঠনটি। প্রতিদিন বহু রোগী এখানে সেবা গ্রহণ করেন।
ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগে আক্রান্ত মানুষদের জন্য মানসিক শক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানটি রোগীদের পরিবারসহ তাদের মানসিক সুস্থতায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। নিয়মিত কাউন্সেলিং সেশন, সেমিনার, এবং রোগীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ওয়ার্কশপ আয়োজন করে সংগঠনটি।।
তবে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির কার্যক্রম এখানেই শেষ নয়। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি তারা সমাজের বিভিন্ন দুর্বল শ্রেণির মানুষের জন্যও কাজ করে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, এবং শিক্ষা সহায়তা দিয়ে তারা সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা পালন করে।
এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণের মতো কার্যক্রমে এই সংগঠনটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৭০ হাজার বৃক্ষরোপণ করেছেন, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের উন্নয়নেও সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
সার কীটনাশক ব্যবহার না করে কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করা যায় তা সচেতনতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সংগঠনটি।
ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির একজন ক্যান্সার আক্রান্ত যোদ্ধা। তার সেবামূলক কাজ গুলো মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি সবসময় অসহায়, দরিদ্র ও বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবার কাছে প্রশংসিত। ক্যান্সার রোগীদের জন্য তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও উদার মনোভাব প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
সৈয়দ হুমায়ুন কবির তার কর্মজীবনের একটি বিশাল অংশ এই সংগঠনের উন্নয়নে ব্যয় করেছেন। তার মতে, “মানুষের সেবা করার মধ্যে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, সেটি অন্য কিছুতেই নেই।
তিনি বলেন, “ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। আমরা চাই, প্রতিটি ক্যান্সার রোগী জীবনের প্রতি আশাবাদী হয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখুক।”
ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ সমাজের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনে বরাবরই সচেষ্ট। তারা ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ক্যাম্প, বর্নাতদের মাঝে খাদ্য, চিকিৎসাসেবা সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি এক মানবিক আন্দোলন। এই প্রতিষ্ঠান ক্যান্সার রোগীদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখায় এবং তাদের পাশে থেকে সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ করে।
সমাজে এই ধরনের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ আরও বড় পরিসরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে, এমনটাই প্রত্যাশা। এটি শুধু ক্যান্সার রোগীদের জন্য নয়, বরং মানবতার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।