কোরআনই জীবনের সকল সমস্যা সমাধান করতে পারে: বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৯:৪২ অপরাহ্ন
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেছেন, কোরআনকে নিজের মধ্যে ধারণ করে তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার যে মহৎ কাজ আপনারা চালিয়ে যাচ্ছেন তা অসাধারণ। আমরা চাই সত্য দিয়ে মিথাকে অপসারণ করতে। আমরা চাই ন্যায় দিয়ে অন্যায়কে দূরিভূত করতে। কোরআন মানেই আলো, অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীকে আলোকিত করতে কোরআন এসেছে। কোরআনই জীবনের সকল সমস্যা সমাধান করতে পারে। কোরআনিক জীবন সকলের মাঝে বাস্তবায়ন করতে পারলে ইহলৌকিক এবং পরলৌকিক মুক্তি লাভ করা সম্ভব।
তিনি সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নগরীর বারুতখানার একটি পার্টি সেন্টারে সিলেটে রিলিজিয়াস এ্যাটাশে অফিস সউদী দুতাবাস বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত হিফজুল কোরআন বাছাই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিযোগীদের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আপনারাই সঠিক মানুষ। আপনাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আমি মনে করছি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি, আলহামদুলিল্লাহ। আপনারা সমাজের সবচাইতে মূল্যবান অংশ। আশা করবো ইসলামের একেক জন প্রতিনিধি হিসেবে আপনারা নিজেদেরকে সমাজে প্রতিষ্ঠত করবেন।
রেজা-উন-নবী বলেন, ইসলাম মানে বিচ্ছিন্নতাবাদ নয়, সন্ত্রাস নয়, জঙ্গিবাদ নয়। কোরআন কখনো জঙ্গি বই হতে পারেনা। কোরআন আল্লাহর বাণী এটি সকল মানুষের জন্য এসেছে। যারা কোরআন নিয়ে কাজ করেন, কোরআনের সেবক, কোরআনের খাদিম, গবেষক, তাফসিরকারক এবং যারা কোরআনের প্রচার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন তারা প্রত্যেকে সমাজের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ, শ্রদ্ধেয় মানুষ। এই মানুষগুলোকে সমাজের সামনের কাতারে নিয়ে আসতে হবে, যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে এরা জঙ্গি নয়, সন্ত্রাসী নয়, বিচ্ছিন্নতাবাদী নয় বরং সমাজের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর এই মানুষগুলো বুক উচিয়ে ভালো কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে।
কোরআনের প্রচারণায় সউদী দুতাবাস সিলেটসহ সারাদেশে এবং পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে যে দায়ী নিয়োজিত করেছেন সেই বিষয়টি অনন্য উল্লেখ করে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, বিষয়টি অবগত হয়ে আমি অভিভূত। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
সৌদি দুতাবাস ঢাকা’র দ্বায়ী শায়েখ সাঈদ আল-মাদানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক মুকতাবিস-উন-নূর। কোরআন প্রতিযোগিতার এই আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে মুকতাবিস-উন-নূর বলেন, এমন আয়োজন প্রতিবছর হওয়া প্রয়োজন। একই সাথে অর্থসহ কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারলে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
শায়খ বদরুদ্দিন বিন ইসহাক আল-মাদানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সউদী দুতাবাসের সাবেক দায়ী শায়খ শায়খুল হাদীস ইসহাক আল মাদানী, কুদরত উল্লাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফিজ মাওলানা মিফতাহ উদ্দিন, দরগাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা আমজাদ আহমদ।
অনুষ্ঠানে হিফজুল কোরআন বাছাই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া মোট ১৭০ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে দুটি ভাগে অর্থাৎ ১ থেকে ১৫ পারা গ্রুপে ৩ জন, ১৬ থেকে ৩০ পারা গ্রুপে ৩ জন নির্বাচিত হয়ে ইয়েস কার্ড পেয়েছেন। তাদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন প্রধান অতিথি সহ অতিথিবৃন্দ। নির্বাচিত ৬ জন হাফিজ জাতীয় পর্যায়ে অংশ গ্রহণ করবেন। জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় মোট ৪৮ জন অংশ নিবে সেখান থেকে ৩জন করে ৬জনকে পুরস্কৃত করা হবে। জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ী তিনজনকে ওমরা হজ করানোসহ যথাক্রমে ৮০, ৭০ এবং ৬০ হাজার টাকা সম্মানী প্রদান করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
হিফজুল কোরআন বাছাই প্রতিযোগিতা ৩০ পারায় ১ম বিজয়ী হয়েছেন বিয়ানীবাজারের মাদরাতুত তাহফীজ চারখাই মাদরাসার তাওহীদ আহমদ, ২য় শায়েস্তাগঞ্জের মারকাজুল হুফ্ফাজ মডেল মাদ্রাসার নূরুল জিহাদ এবং ৩য় হয়েছেন চুনারুঘাটের মারকাজুল ফুরকান মডেল মাদ্রাসার আজীজুল হক তাসলিম।
১৫ পারায় ১ম বিজয়ী হয়েছেন বিয়ানীবাজারের মাদ্রাসাতুত তাহফীজ চারখাই’র নাসিমু্দিনমা, ২য় সিলেটের আলিনগরের জামেয়া রাহমানিয়া তাহফিজুল ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার মুশফিকুর রহমান এবং ৩য় হয়েছেন রানাপিং-এর মাদ্রাসাতিল ইকরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার মুসতাকিম বিল্লাহ মারজু।
হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার সিলেট বিভাগের বাছাই পর্বে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন হাফিজ ক্বারী মাসুক আহমদ, হাফিজ ক্বারী শাহ আলম, হাফিজ ক্বারী জহিরুল ইসলাম, হাফিজ ক্বারী আব্দুল্লাহ।
সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মাওলানা রশিদ আহমদ, মাওলানা জুনাইদ আহমদ, রুমায়েম বখত, মুস্তাকীম ও হাফিজ আব্দুর রহমান।