দাফনের ৯ দিন পর বাড়িতে ফিরলেন রোকসানা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুন ২০২৪, ১১:০১:৪৫ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: থানা থেকে লাশ গ্রহণ করে দাফন সম্পন্ন হয়েছে যথারীতি। এমনকি দাফনের তিনদিন পর কুলখানি অনুষ্ঠানও হয়েছে। পরিবারের সবাই শোকগ্রস্ত। এরই মাঝে দাফনের ৯ দিন পর বাড়িতে হাজির হলেন রোকসানা আক্তার (৩০)। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর গ্রামে।
এই নিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফিরে আসা তরুণীকে এক নজর দেখতে উৎসুক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করছেন। রোকসানা আক্তার ওই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে রোকসানা আক্তার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ছোট ভাই সালাহ উদ্দিনের চট্টগ্রামের বাসায় বেড়াতে যান। পহেলা জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে রোকসানা বাসা থেকে বের হন। এরপর দীর্ঘদিন খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গত ১৭ জুন ঈদুল আযহার দিন বিকেলে ফেনী শহরে ভাড়া বাসায় অবস্থানরত খালাতো বোন হাজেরা আক্তার ও খালাতো ভাই শাহজাহান খবর পান- ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেনের মাঝে একজন নারীর লাশ পড়ে আছে। তারা ভাই এবায়দুল হককে খবর পাঠান। এবায়দুল হক ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে লাশ উদ্ধারকারী উপ-পরিদর্শক প্রতুল দাসের সাথে দেখা করে বোন রোকসানার ছবি দেখান।
পুলিশ এবায়দুল হকের হাতে ওই লাশ হস্তান্তর করে। ওইদিন বাদ আছর গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর মধ্যমপাড়ায় সামিশকরা দীঘির দক্ষিণ পাড়ে তার লাশ দাফন করা হয়। লাশ দাফনের ৯ দিন পর গত ২৬ জুন বিকেলে ঘটে বিপত্তি। রোকসানা বাড়িতে হাজির হলে আঁতকে উঠেন সবাই।
রোকসানা আক্তার বলেন, আমি চট্টগ্রাম ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি একটি চাকরি পেয়ে যাই। গত ২৬ জুন বাড়িতে এসে দরজা নক করলে আত্মীয় স্বজনরা আমাকে দেখে হতবাক হয়ে গেছেন। তখন আমি জানতে পারি- আমি নাকি মারা গেছি এবং আমার লাশও দাফন করা হয়ে গেছে। আমিতো জীবিত ফিরে আসলাম।
নিখোঁজের ৯দিন পর ফিরে আসা রোকসানার ভাই এবায়দুল হক বলেন, খালাতো ভাই-বোনের সংবাদ পেয়ে ছবিতে কিছুটা মিল থাকার কারণে বোনের লাশ মনে করে পুলিশ থেকে লাশটি এনে দাফন করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে রোকসানা জীবিত বাড়ি ফিরলে ফেনী মডেল থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক প্রতুল দাস শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, উদ্ধার করা লাশটি বিকৃত ছিল। এবায়দুল হক ও তার স্বজনরা উদ্ধারকৃত লাশটি রোকসানার বলে শনাক্ত করে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু তাদের বোন স্বশরীরে বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে, তাই আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো।