তিন আসনে নৌকাপ্রত্যাশী ৬০
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ২:৪৩:১২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন ৬০ জন।
তাদের মধ্যে ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) থেকে ২১, ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) থেকে ১৭ ও ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে ২২ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
নৌকা পেতে প্রার্থীর ছড়াছড়ি নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সম্মেলন কিংবা কমিটি হয়নি। এতে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে বিরাজ করছে বিশৃঙ্খলা, যা নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় প্রকাশ্যে এসেছে এবং বিপুলসংখ্যক মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে ভূমিকা রেখেছে।
ময়মনসিংহ-১১ থেকে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন– বর্তমান এমপি কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু, ভালুকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পৌর মেয়র ডা. এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন, ভালুকা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রশিদ, সংরক্ষিত আসনের এমপি মনিরা সুলতানা মনি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ ওয়াহেদ, কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, উপদেষ্টা সদস্য অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহ আশরাফুল হক জজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. কে বি এম হাদিউজ্জামান সেলিম, রাজধানীর তেজগাঁও থানার মনিপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাদাত ইসলাম চৌধুরী মিন্টু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিপ্লব, সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ডা. এম আমানউল্লাহর স্ত্রী অধ্যাপক ডা. সাইদা আখতার, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আনিছুর রহমান খান রিপন, সাধারণ সম্পাদক এজাদুল হক পারুল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তপু গোপাল ঘোষ, মোহাম্মদ আদনান খান ও শফিকুল ইসলাম খান।
২০০৩ সালে সর্বশেষ ভালুকা উপজেলায় সম্মেলন ও কমিটি হয়। উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন কমিটির বয়স ২০-২৫ বছর। মনোনয়নপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম পিন্টু জানান, ২০ থেকে ২৫ বছর কমিটি পুনর্গঠন না হওয়ায় গ্রুপিং ও সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা রয়েছে। আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী এম এ ওয়াহেদ জানান, দীর্ঘদিন কাউন্সিল না হওয়ায় তৃণমূলে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। তবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে সবাই নৌকার পক্ষে কাজ করবেন।
ময়মনসিংহ-৯ থেকে নৌকার প্রার্থী হতে ১৭ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তারা হলেন– বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন, সাবেক এমপি মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক স্বপন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান ভূঁইয়া, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জালাল উদ্দিন মাস্টার, অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই, ছাত্রলীগ নেতা শাহজাহান কবীর সুমন, মোস্তাফিজুর রহমান রানা, ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া হেভেন, জালাল উদ্দিন আকন্দ, জামাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জীব আফেন্দী, তাসলিমা বেগম, মোসাদ্দিকুর রহমান রাসেল, মুজিবুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম।
নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান সরকার জানান, মনোনয়ন ফরম কেনাদের অনেকেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। দলীয় কর্মকাণ্ডেও কখনও দেখা যায় না।
ময়মনসিংহ-৭ থেকে নৌকা চেয়ে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ২২ জন। এ আসনে এত সংখ্যক মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ আগে হয়নি। এ জন্য দীর্ঘদিন সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা, বিশৃঙ্খলা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল দায়ী বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
উপজেলায় বর্তমান এমপি রুহুল আমীন মাদানী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মতিন সরকার, ত্রিশাল পৌর মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান আনিছ, উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন এবং সিআইপি আমিনুল হক শামীমের নেতৃত্বে আলাদা গ্রুপ সক্রিয়।
এবার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন রুহুল আমিন মাদানী এমপি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মতিন সরকার, পৌর মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান আনিছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজ, আইনবিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আমিনুল হক শামীম, নবী নেওয়াজ সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম মো. সামছুদ্দিন, সহসভাপতি এ এন এম শোভা মিয়া আকন্দ, হাবিবুর রহমান খান, ফজলে রাব্বি, আশরাফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপকমিটির সদস্য নুরুল আলম পাঠান মিলন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তালুকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোহান খান, মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি সাইফুল ইসলাম মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা মিরান আলী, ডা. গোলাম মোস্তফা, মেজর জেনারেল (অব.) নজিব হাসান, এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন ও কামরুল ইসলাম।
গ্রুপিংয়ের তথ্য অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের মাঝে প্রতিযোগিতা আছে, কিন্তু প্রতিহিংসা নেই। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। যিনি নৌকা পাবেন, সবাই তাঁর পক্ষে কাজ করব।’ তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফজলে রাব্বি বলেন, ‘দীর্ঘদিন সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতার কারণে ঐক্য হারিয়ে বিশৃঙ্খলা, দলাদলি ও কোন্দল দেখা দিয়েছে। এ কারণেই এবার প্রার্থী বেড়ে গেছে।’