ছাতক সুরমা সেতুর উদ্বোধন আজ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৫০:২৭ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার সুরমা নদীর উপর নির্মিত ‘ছাতক সুরমা সেতু’। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় একযুগে দেশের ১৫০টি সেতুর সাথে এই সেতু ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনের পর থেকেই জনসাধারণের চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দিবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
প্রত্যাশিত সেতুটির মাধ্যমে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা হতে যাচ্ছে। খুলবে জেলার উত্তরে উন্নয়নের দ্বার। ঢাকাসহ সারা দেশের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন এসব অঞ্চলের মানুষ। উৎপাদিত শিল্প পণ্যসহ এলাকার চাষাবাদকৃত সবজি দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত পৌঁছে যাবে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে। এতে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১২৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০২.৬১ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করে মেসার্স জন্মভূমি নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এর আগে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট সুরমা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বিএনপি সরকারের আমলে। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পের আওতায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অর্থ সংকটে দীর্ঘদিন প্রকল্পটির কাজ বন্ধ হয়ে গেলে ২০১৬ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিকের প্রচেষ্টায় সেতুর অবশিষ্ট কাজ ও সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মার্ণের পরিকল্পনা গ্রহন করে সরকার। অর্থের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বরাদ্দে ২০১৭ সালে ফের সেতুর কাজ শুরু করা হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর নির্মাণ কাজ শেষ করে আলোর মুখ দেখে প্রকল্পটি।
এদিকে বহুল প্রতিক্ষিত ছাতক সুরমা সেতু উদ্বোধনের খবরে জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার উত্তরপূর্বাঞ্চলে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সরকারের শেষ সময়ে এমন উপহার দেয়ায় তারা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে।
এলাকাবাসী জানান, সুরমা সেতু উদ্বোধনের ফলে উত্তর সুরমার প্রায় ৪ লাখ মানুষের যোগাযোগের দুর্ভোগ ঘুচবে। এলাকার মানুষ অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। এলাকায় আরও অনেক শিল্পকারখানা গড়ে ওঠবে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের পথও সুগম হবে। ছাতক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এ উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সুরমা নদী। সুরমা নদীর দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে দেশের বৃহৎ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ‘লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট’ কোম্পানির অবস্থান। পাশাপাশি ছাতক সিমেন্ট কারখানা এবং দোয়ারাবাজারে রয়েছে ‘টেংরা টিলা গ্যাস ফিল্ড’। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের পাশাপাশি চলাচলের ক্ষেত্রে এলাকার মানুষ সরাসরি ঢাকার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
সুরমা নদীর উত্তর প্রান্তে ছাতকের ইসলামপুর ও নোয়ারাই এবং দোয়ারাবাজারের দোয়ারাবাজার সদর, নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বোগলা, লক্ষ্মীপুর ও সুরমা ইউনিয়নের অবস্থান। তিনি জানান, দোয়ারার বাংলা বাজার এলাকায় প্রচুর শাকসবজি উৎপাদিত হয়। ব্রিজটি হওয়ায় এসব ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের পথ সুগম হবে। বিশেষ করে ছাতকের সোনাল চেলা এবং দোয়ারাবাজারের বাঁশতলা দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথরসহ বিভিন্ন পণ্য নদী পথে আমদানি-রপ্তানি হয়। সেতুর চালুর ফলে সড়ক পথে আমদানি-রপ্তানি অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, দেশের ১৫০টি সেতুর সাথ আজ ছাতক সুরমা সেতু উদ্বোধন করনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনের পর থেকে সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। প্রকল্পটি মাঝ পথে থেমে ছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করেছি। সেতু চালু হওয়ায় এই এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সম্ভাবনা তৈরী হবে বলে মনে করেন তিনি।