বঙ্গবীর স্মরণে লণ্ডনে সভায় লামা: ওসমানীকে সম্মান করলে মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করা হবে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:০২:৩৫ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস: সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসুদ ইবনে আজিজ লামা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে সম্মান করলে মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করা হবে। ওসমানী ছিলেন সততার প্রতীক। এ ধরনের সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিকে চক্রান্ত করে ইতিহাসের পাতা থেকে কেউ মুছতে পারবে না। তাঁর নাম বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর রোববার বঙ্গবীর জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানীর ১০৫তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবীর ওসমানী মেমোরিয়েল ফাউণ্ডেশন ইউকের উদ্যোগে পূর্ব লণ্ডনের মাইক্রোবিজনেস সেন্টারে আয়োজিত এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব কবির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি কে এম আবুতাহের চৌধুরী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান জামাল নুরুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন— বঙ্গবীর ওসমানী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খান, প্রবীণ সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম আলী সৈয়দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রহমান, কমিউনিটি নেতা সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি মুহিবুর রহমান, কাউন্সিলার ওসমান গনি, কাউন্সিলার সুলুক আহমদ ও সাবেক কাউন্সিলার ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— নুরুল ইসলাম এমবিই, এডভোকেট আব্দুল হালিম বেপারী, সলিসিটর মোহাম্মদ ইয়াওর উদ্দিন, প্রভাষক আব্দুল হাই, মাওলানা রফিক আহমদ, মশিউর রহমান মশনু , হাজী ফারুক মিয়া, মিসেস ঝরনা চৌধুরী, আহমদ লাবিব রহমান প্রমুখ।
সভায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আনোয়ার রাব্বানী ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা জিল্লুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি মকসুদ ইবনে আজিজ লামা আরও বলেন, গেরিলা যুদ্ধ থেকে শুরু করে যুদ্ধের সকল পরিকল্পনা তিনি গ্রহণ করেছিলেন। ভারতীয় জেনারেলরা পর্যন্ত ওসমানীকে সম্মান করতেন। তিনি কলকাতা থেকে ডাঃ চ্যাটার্জিকে করিমগঞ্জে নিয়ে এসে তাঁর পায়ের সফল অপারেশনের ব্যবস্থা করেন। তিনি বাংলাদেশকে গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা করেছেন ।তৎকালীন সেক্টর কমাণ্ডার জিয়াউর রহমানের জেড ফোর্স মুক্তিযুদ্ধে বিরাট ভূমিকা পালন করে। মেজর জলিল অনেক ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে যারাই অবদান রেখেছেন তাদের মূল্যায়ন করতে হবে ।
বীর মুক্তিযাদ্ধা এম এ মান্নান বলেন, তিনি সিলেট ও বাংলাদেশ নয় ,সারা বিশ্বের অহংকার।ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে না থাকলে নয় মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না।
বীর মুক্তিযাদ্ধা মোস্তফা বলেন, তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ মেজর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর রণকৌশল ও ট্রেনিং বিজয় লাভে সাহায্য করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খান বলেন, কোন লোভ লালসা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। সময়ের প্রতি তিনি ছিলেন যত্নবান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ বলেন, তিনি ছিলেন জাতির এক রোল মডেল। তিনি ছিলেন অসীম সাহসিকতা, নিয়মানুবর্তিতা, সততা ও নিষ্ঠার প্রতীক। তাঁর সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে ।
সাবেক কাউন্সিলার ও ডেপুটি স্পীকার ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ বলেন,বঙ্গবীর ওসমানীর প্রতি পাকিস্তানী শাসকরা অবিচার করেছে। বাংলাদেশেও তিনি আজ উপেক্ষিত। নতুন প্রজন্মের কাছে ওসমানীর অবদান তুলে ধরতে হবে। পাঠ্য পুস্তকে ওসমানীর জীবনী অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
সভায় বিপুল সংখ্যক বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শিরনি বিতরণ করা হয় ।