বিদেশি শ্রমিক আবেদনের কোটা অনুমোদন স্থগিত করল মালয়েশিয়া
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মার্চ ২০২৩, ৫:৪৩:৩২ অপরাহ্ন
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিক আবেদনের কোটা অনুমোদন স্থগিত করেছে সরকার। বিদেশী কর্মী কর্মসংস্থান শিথিলকরণ পরিকল্পনা (পিকেপিপিএ) সহ বিদেশী কর্মীদের জন্য কোটার আবেদন এবং অনুমোদন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মীদের অনুমোদন স্থগিত করেছে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়। ১৮ মার্চ শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ভি. শিবকুমার।
এর আগে নিয়োগকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার নিয়োগকর্তার প্রাকযোগ্যতা যাচাই তথা কাজ এবং কর্মীর জন্য আবাসনসহ বেশকিছু শর্ত যাচাই স্থগিত করে কোটার অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এই বিশেষ প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ বিদেশী কর্মীর কোটা অনুমোদন করা হয়েছে তার থেকে কম পরিমাণের বিদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় কর্মে নিয়োজিত হয়েছে।
তিনি দ্রুত কর্মী আনার জন্য নিয়োগকর্তাদের অনুরোধ করেছেন। অর্থাৎ সরকার কর্মী আগমন প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করবে। এর পরবর্তী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সে সম্পর্কে কোন ঘোষনা করেননি।
তিনি বলেন, ‘ফরেন ওয়ার্কার এমপ্লয়মেন্ট রিল্যাক্সেশন প্ল্যানে (পিকেপিপিএ) বিদেশি কর্মীদের জন্য কোটার আবেদন অনুযায়ী ১৪ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন সেক্টরের জন্য মোট ৯,৯৫,৩৯৬ জন কর্মীর কোটা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে। তবে এর বিপরীতে ঠিক কত পরিমাণ বিদেশী কর্মী মালয়েশিয়ায় এসেছে সে সংখ্যা উল্লেখ করেননি।
মন্ত্রীর বিবৃতি অনুযায়ী ফরেন ওয়ার্কার এমপ্লয়মেন্ট রিল্যাক্সেশন প্ল্যানের (পিকেপিপিএ) মাধ্যমে উৎপাদন, নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, কৃষি এবং পরিষেবা খাতে কোটা অনুমোদন করেছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ খাতসহ শিল্পকারখানায় এসব কর্মীদের দিয়ে শ্রম চাহিদা মেটানো সক্ষম বলে আশা করছেন মানবসম্পদ মন্ত্রী।
এ দিকে বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গত ৫ মার্চ পর্যন্ত দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সেক্টরে মোট ৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৭৩ জন কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন দিয়েছে। বিপরীতে ৫ মার্চ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম-কল্যাণ উইং থেকে ২ লাখ ১৯৯ জন কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্রে সত্যায়ন করা হয়েছে। ৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটি থেকে মালয়েশিয়া যেতে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৫০০ জনকে। অর্থাৎ দূতাবাস এবং বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীর প্রক্রিয়া অপেক্ষমান আছে।
মোট অনুমোদিত কোটার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সেক্টরে মোট ২,০৪,৯৭৩ জন কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারবে। হাইকমিশন সূত্রে জানাগেছে সত্যায়ন প্রক্রিয়াটি চলমান এবং খুব দ্রুত সব চাহিদা সত্যায়ন করা হবে। কর্মী আসার প্রক্রিয়াটিও চলমান।
মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োজন স্থগিত করেনি বরং যে পরিমাণ কোটা অনুমোদন দিয়েছে সব কর্মী মালয়েশিয়ায় আসতে পারবে। হাইকমিশনও নিয়োগকর্তাদের অনুরোধ করেছে যেন অনুমোদনপ্রাপ্ত সব কর্মীকে দ্রুত বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় নিয়োজন সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: গোলাম সারোয়ার মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রীকে কর্মী নিয়োজন দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সাথে সম্পাদন করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ প্রেক্ষিতে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফরে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ যৌথ ব্রিফিং-এ জানিয়েছিলেন, দেশটিতে কর্মী পাঠানোর গতি বৃদ্ধি এবং অভিবাসন খরচ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে দু’দেশের মধ্যকার সমঝোতা স্বারকে পরিবর্তন আনা হবে।