স্মরণশক্তি কমে যাচ্ছে? সমাধান আছে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০২:৩৫ অপরাহ্ন
অনুপম স্বাস্থ্য ডেস্ক: সবার মনে রাখার ক্ষমতা বা স্মরণশক্তি এক রকম থাকে না। আমরা গ্রীক বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে এ তথ্য পাই যে- মানুষের মস্তিষ্কের ১৪ বিলিয়ন স্নায়ুকোষ একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে একটা ইলেকট্রো কেমিক্যাল চক্র তৈরি করে, একে এনগ্রাম বলে। প্রতিটা এনগ্রাম এর পথই হলো স্মরণশক্তি। জেনেটিক বিজ্ঞানীরা বলেন, পিতামাতার স্মরণশক্তি বা মেধাশক্তি বেশি থাকলে সন্তানরাও সে রকম হয়। এজন্য স্মরণশক্তির বংশগতির বৈশিষ্ট্যের একক জিনের ওপর শতকরা ৬০ ভাগ নির্ভরশীল। বাকি ৪০ ভাগ পরিবেশ, পুষ্টিকর খাদ্য ও মস্তিষ্কের চর্চার ওপর নির্ভর করে। গবেষকদের মতে, কোনো শিশু কম বুদ্ধি বা কম স্মরণশক্তিসম্পন্ন জিন বহন করলেও ভালো পরিবেশের কল্যাণে ভালো বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারে।সুতরাং সহায়ক পরিবেশ পেলে এবং মস্তিষ্কের কিছু চর্চা করলে স্মরণশক্তি বাড়ানো সম্ভব।
বর্তমানে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া কোনো বিষয় বেমালুম ভুলে যান অনেকেই। পুষ্টিবিদরা বলছেন, শরীরে ভিটামিন ডি-র পরিমাণ কমে গেলে তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের ওপরও। তবে যদি সচেতন হতে পারেন, এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তি তৈরির ক্ষমতা, দ্রুত জবাব তৈরির মতো মানসিক ক্ষমতা কমতে থাকে। কিন্তু বর্তমানে কম বয়সেও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে এই ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়লেও নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। কিছু লক্ষণ আছে, সেগুলো দেখলে বুঝবেন শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পড়েছে। সেটা বুঝে একটু সচেতন হলেই মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ানো যায়। চলুন জেনে নেয়া যাক-
ঘন ঘন জ্বর, সর্দি-কাশি
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী রাখে ভিটামিন ডি। এর ফলে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হয় শরীর। যদি ঘন ঘন ভাইরাল জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হন, তা শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে।
চুল পড়ে যাওয়া
পুষ্টিহীনতায় ভোগার কারণে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি’র অভাব। ঠাৎ করে চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে খেয়াল করতে হবে শরীরে ভিটামিন ডি কমে গেছে কি-না।
হাড় এবং পেশিতে দুর্বলতা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভিটামিনের অভাবে হাড় ও পেশি দুর্বল থাকে। এ ছাড়া ব্যথা, অস্থিসন্ধিগুলোর বিকৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা ভিটামিন ডি-র ঘাটতির উপসর্গ হতে পারে।
ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন
শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম হলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দেখা দিতে পারে, যা ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন করতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে, ভালোভাবে বিশ্রাম নিয়েও যদি আপনি অলস এবং ক্লান্ত বোধ করেন তবে এটি ভিটামিন ডি-র অভাবের সূচক হতেই পারে।
খেতে ইচ্ছে করে না
অকারণে ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি এবং শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছে হতে পারে শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাবে। খুদা পেলেও খেতে ইচ্ছে করছে না। খুদা কমে যাওয়াও হতে পারে ভিটামিন ডি ঘাটতির লক্ষণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক আহারই সঠিক পুষ্টি দেয় আমাদের। তাই ভিটামিন ডি পাওয়ার জন্য আমাদের সঠিক খাবার খেতে হবে, যাতে রয়েছে এই মিনারেল।
এজন্য কেবল সূর্যরশ্মি থেকেই নয়, প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু বদল আনলেও শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি মেটানো সম্ভব। শরীরে এই ভিটামিনের পর্যাপ্ত জোগান দিতে ডায়েটে বেশি করে দই, দুধ, ছানা, মাছ, মাশরুম, ওট্স, পালং শাকের মতো খাবার রাখতে হবে।