‘ইভিএমে সূক্ষ্ম কারচুপি সম্ভব’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০২২, ৮:২৪:০৮ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সূক্ষ্ম কারচুপি সম্ভব। আর ব্যালটে যেটা সম্ভব নয়।’
নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে আজ বুধবার তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনে ১২ অক্টোবরের উপনির্বাচনের ভোট চলাকালে কেন্দ্রে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে প্রথমে ৫১ কেন্দ্র ও পরে ১৪৫ কেন্দ্রের সবগুলোর ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। অনিয়ম হলে ভোট বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকলেও এর আগে কখনো এর প্রয়োগ দেখা যায়নি।
সেদিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে কী হয়েছিল, তার তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে তারা।এ ঘটনায় মতামত নিতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশনার ও কমিশন সচিবদের আমন্ত্রণ জানায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।
১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনাকারী আব্দুর রউফ, ২০১৪ সালের কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন পরিচালনাকারী কেএম নূরুল হুদা বর্তমান আউয়াল কমিশনের ডাকে সাড়া দিয়ে আলোচনায় আসেন।
বৈঠকে আসেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, সাবেক ইসি সচিব মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বর্তমান সিইসি, অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ইসির সঙ্গে আলোচনা শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এম সাখাওয়াত। তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা নিয়ে বিতর্ক আছে। সেটা ভালো হোক, মন্দ হোক। ইভিএম যেখানে ব্যবহার হচ্ছে, ব্যবহার করুন। ব্যালট পেপার নিয়ে গেলেও সেটা ফাইন্ড আউট করা সম্ভব। কিন্তু ইভিএমে সূক্ষ্ম কারচুপি সম্ভব। বাইরে কোনো হইচই নাই, কিছু নাই, অথচ ভেতরে কী হচ্ছে, গাইবান্ধায় যেটা আমরা দেখলাম। অন্য সিস্টেমে হলে (ব্যালট পেপারে কারচুপি) বাইরেও হইচই হতো। সেটা আরও ভালো করে দেখতে পারতেন। কারণ কেন্দ্র ক্যাপচার করতে তো লোকবল লাগবে।
তিনি বলেন, পাঁচ বছর আমাদের যে অভিজ্ঞা হয়েছিল, সেটা ইউনিক। আর কোনো কমিশন সেটা পারেনি। প্রথমেই আমি যেটা বলেছি, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে যে পদক্ষেপ নিয়েছে আমি তাদের স্বাগত জানিয়েছি। এই পর্যন্ত ঠিক আছে, পরের ধাপগুলোতে যেন স্লিপ না করেন। যদি করেন, তাহলে জাতির কাছে অন্যরকম একটা মেসেজ যাবে, যে আপনারা এইটুকু দেখানোর জন্য করলেন। বাকিটুকু করলেন না। এজন্য আইন আপনাদের শক্ত অবস্থানে যেতে বলেছে, প্লিজ ডু ইট।
‘আর নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে পরিবেশ ঠিক নেই, তাহলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারেন। কোথাও কোনো বাধা নেই। কারণ সংবিধানের ১১৯ ধারা বলে আপনার কাজ হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। বাকিটা আপনাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।’
বাংলাদেশে কোনো কমিশন এর আগে এই কাজটি করতে পারেনি উল্লেখ করে সাবেক এই ইসি বলেন, ১৯৯৪ সালে যদি এটা করা হতো তাহলে আজকের পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। আপনারা নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বা যাদের দিয়ে নির্বাচন করবেন তাদের আত্মবিশ্বাসে আনতে হবে। বরিশালে যেটা ভাইরাল হতে দেখেছি, এখানে ইউএনওকে প্রটেকশন দেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের।সবচেয়ে বড় স্ট্রং হচ্ছে সাবকন্টিনেন্টে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে বড়। আড়াই হাজার লোকবল ও অফিস নিয়ে আর কোনো নির্বাচন কমিশনের এটা নেই। তবে লোকগুলোর ব্যবহার করতে হবে।