যেসব খাবার ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বাড়ায় ও কমায়
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ আগস্ট ২০২২, ২:১৯:১৭ অপরাহ্ন
অনুপম প্রতিবেদক: কথায় আছে- মাথা নেই তো কিছুই নেই। এই মাথা মানে ইংরেজি head না। এখানে মাথা মানে brain বা মস্তিষ্ক। দেহের অন্যতম অপরিহার্য অঙ্গ ব্রেন বা মস্তিষ্ক। আমরা যেসব কাজ করি এবং যা চিন্তা করি তা মূলত মস্তিষ্কের মাধ্যমেই। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ওপর ব্যক্তির কর্মদক্ষতা প্রকাশ পায়। যেসব খাবার খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা পালন করে সেগুলি হল-
ডিম
ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম, দুটাই উপকারী। আর ডিমের অমলেট বা পোচের তুলনায় সেদ্ধ ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। ভিটামিন বি৬ এবং বি১২ থাকে ডিমের মধ্যে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
ব্রকোলি
ভিটামিন কে ছাড়াও ব্রকোলিতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। মস্তিষ্কে শান দিতে এইসব উপকরণ যথেষ্ট প্রয়োজনীয়।
মাছ
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের কথা উঠলে মাছের কথা সবার প্রথমে মনে পড়ে। যেসব মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে সেগুলো মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আমন্ড বা কাঠবাদাম
রোজ সকালে ২ থেকে ৩টা আমন্ড পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। আগের দিন রাতে পানিতে এই আমন্ড ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন খোসা সমেত বা খোসা ছাড়িয়ে ভিতরের শাঁসটুকু খেতে পারেন।
কমলালেবু
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কমলালেবু মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। মানসিক বিকাশ ঘটায়, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপকরণ বয়স্কদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে এবং বার্ধক্যজনিত রোগ যেমন- অ্যালঝাইমার্স, অ্যাংজাইটি থেকে আপনাকে দূরে রাখবে।
ডার্ক চকলেট
সাধারণ চকলেট বা মিল্ক চকলেটের তুলনায় ডার্ক চকলেটে অনেক বেশি পরিমাণ কোকো থাকে যা মস্তিষ্কের দেখভাল করতে সাহায্য করে।
কফি
কফি খাওয়া মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। তবে প্রচুর পরিমাণে কফি খেলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। অ্যাসিডিটির সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ক্যাফাইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট- কফির এই দুই মূল উপকরণ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
গ্রিন টি
শুধু অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে নয়, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও গ্রিন টি সাহায্য করে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে এবং পার্কিনসনের মতো রোগ থেকে আপনাকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে এই গ্রিন টি।
পিনাট বাটার
পিনাট বাটারের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই। যা আমাদের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং স্নায়ুর চাপ কমায়। এছাড়াও ভূমিকা রয়েছে এনজাইম নিঃসরণে। যেখান থেকে মস্তিষ্ক ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের বাদাম
সব বাদামই আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এখানে থাকে ভিটামিন ই, হেলদি ফ্যাট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমায় যেসব খাবার
কিছু খাবার বুদ্ধি কমায়। ব্রেইনের কার্যক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। এই খাবারগুলি থেকে সাবধান থাকা দরকার।
বুদ্ধি, মেধা, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা— এগুলির অনেকগুলিই যেমন নির্ভর করে জিনের গঠনের উপর, তেমনই এর সঙ্গে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, বেড়ে ওঠার দিনগুলিতে কেমন মানুষের সঙ্গলাভ হয়েছে— এইগুলিরও ভূমিকা থাকে। তবে বড় ভূমিকা রাখে খাবার।
পুষ্টিকর খাবার যেমন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা এবং বুদ্ধিমত্তা বাড়ায়, তেমনই কিছু কিছু খাবার এর উল্টো কাজ করে। মানে, সেগুলি কমিয়ে দিতে পারে বুদ্ধি।
চিনি: বেশি মিষ্টি খেলেও বুদ্ধি দ্রুত হ্রাস পেতে পারে। বেশি পরিমানে চিনি খেলে স্মৃতিশক্তিও কমে যায়। এমনকী নতুন জিনিস শেখার আগ্রহও কমে যায় চিনির কারণে।
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস: চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস বা রেড মিট খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা দ্রুত কমতে থাকে। এটি বেশি করে প্রযোজ্য মহিলাদের ক্ষেত্রে। রেড মিটের প্রভাব তাঁদের মস্তিষ্কে বেশি মাত্রায় পড়তে পারে।
মাখন: মাখনেও এমন কিছু উপাদান আছে, যেগুলি স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মস্তিষ্ক সচল রাখতে এটি খাওয়া কমান।
ফাস্ট ফুড: বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড মানুষের মস্তিষ্কে উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। অবসাদ বা উদ্বেগের মাত্রা বাড়ে এগুলি নিয়মিত খেলে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার মস্তিষ্ক ডোপামিন নামক হরমোনের ক্ষরণে বাধা দেয়। এই ডোপামিন মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। ডোপামিনের ক্ষরণ কমলে কমে যায় মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও।
বেশি লবনযুক্ত খাবার: অতিরিক্ত লবন আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বেশি লবন খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কে নানা অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে। হৃদযন্ত্রেরও ক্ষতি হয়। অতিরিক্ত লবন যুক্ত খাবার আমাদের চিন্তাশক্তির ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। সিগারেট খেলে মস্তিষ্কের যেমন ক্ষতি হয়, বেশি নুন যুক্ত খাবার খেলেও তাই।
মদ এবং সিগারেট: মদ ও সিগারেটের নেশা অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের বুদ্ধিকে দুর্বল করে দেয়। এর ফলে স্মৃতিশক্তিও অনেক সময় হ্রাস পেতে পারে। সূত্র: হেলথলাইন