স্মৃতিভ্রম বা ডিমেনশিয়ার দশ লক্ষণ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ২:২৮:৪৪ অপরাহ্ন
ডা. রাশেদ সোহরাওয়ার্দী: আমরা সবাই কমবেশি ভুলে যাই। ভুলে যাওয়া কি সাধারণ কোনো ঘটনা, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে কোনো রোগ বা অসুখ? ডিমেনশিয়া নিয়ে যখনই কথা বলি সবাই মনে করে, আমিও তো ভুলে যাই। তাহলে আমারও কি ডিমেনশিয়া হয়েছে? তাহলে আসুন, ভালো করে চিনে নিই ডিমেনশিয়াকে।
– ডিমেনশিয়ার কারণে নিকটতম অতীতের স্মৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবার আগে। অতীতের কথা খুব ভালোভাবে বলতে পারেন; কিন্তু একটু আগে কী করেছেন তা মনে করতে পারেন না। এ ছাড়াও দিন-তারিখ-সময় মনে করতে পারবেন না। একই কথা বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকেন।
– দৈনন্দিন কাজ সম্পাদনে সমস্যার সৃষ্টি হবে। যেমন- কোনো কিছু ভালোমতো পরিকল্পনা করার পরও তালগোল পাকিয়ে ফেলা, বাড়ির রাস্তা ভুলে যাওয়া ইত্যাদি।
– ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে। মাঝে মাঝে সঠিক শব্দ খুঁজে পাবেন না বা কথার খেই হারিয়ে ফেলবেন। এমনকি উত্তেজিত হয়ে যেতে পারেন।
– ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্থান ও সময় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে। আজ মাসের কত তারিখ বা কী বার, এটা তাঁরা বলতে পারবেন না। এমনকি নিজের ঘরকেও অপরিচিত মনে হতে পারে।
– ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন এবং তিনি যা ভাবছেন সেটাকেই সঠিক বলে মনে করবেন। এটা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে মনোমালিন্য তৈরি হতে পারে।
– ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি গণনা করা ভুলে যাবেন। টাকা-পয়সা বা অন্যান্য হিসাব তাঁরা রাখতে পারবেন না বা ভুল করবেন। লেনদেনের ক্ষেত্রে অসংগতি দেখা দেবে।
-ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র খুঁজে পাবেন না, যেমন মানিব্যাগ, দলিলপত্র। তাঁরা নিজেরা লুকিয়ে রাখবেন কিন্তু ভুলে যাবেন যে কোথায় রেখেছেন।
-হঠাৎ মুড পরিবর্তন হওয়া আরেকটি লক্ষণ। রেগে যাওয়া, কারণ ছাড়া মন খারাপ করা, ডিপ্রেশনে ভোগা ছাড়াও আচার-ব্যবহারে পরিবর্তন আসতে পারে।
-ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন আসা। যেমন- হাসিখুশি মানুষটি হঠাৎ গম্ভীর ও বদরাগী হয়ে যেতে পারেন। আগে অনেক মিশুক ছিলেন এখন একেবারে চুপচাপ।
-আমরা সবাই মাঝে মাঝে একঘেয়েমিতে ভুগি, আবার ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো কিছু করার প্রতি আগ্রহ বা উৎসাহ থাকে না। ওপরের এক বা একাধিক কারণ যদি কোনো মানুষের মাঝে দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে নিওরোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
ডা. রাশেদ সোহরাওয়ার্দী, ডিমেনশিয়া বিশেষজ্ঞ