ফেঞ্চুগঞ্জে আলহাজ্ব ইন্তাজির খানের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৯:৪২:৫৯ অপরাহ্ন
ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি : সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঠানটিলা গ্রামের আলহাজ ইন্তাজির খানের ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল ৯ ফেব্রুয়ারি।
তাঁর ইসালে সওয়াব উপলক্ষে ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া হিফজুল কুরআন মাদ্রাসায় এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আতাহার। প্রধান অতিথি ছিলেন কাসিম আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্তিত ছিলেন নুরুল হক এডুকেশন ট্রাস্টের উপদেষ্টা ও সমাজসেবী মোঃ জাহাঙ্গীর খান এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মাদ্রাসার ভূমিদাতা সদস্য মোহন খান।
মাদরাসার ছাত্র তাসনিম হাসান শাহীর কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সভায় উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ আলহাজ ইন্তাজির খানের কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আতাহার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। তিনি অনন্য গুণবান ইন্তাজির খানের বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা রাখার প্রশংসা করে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথি কাশিম আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহাদুজ্জামান বলেন, আলহাজ ইন্তাজির খান একজন মহান শিক্ষাগুরু ছিলেন। শিক্ষাকে তিনি মানবতা ও সৌন্দর্যের ধারক হিসেবে মানতেন। তিনি জীবন চলার পথে তাঁর কথায় এবং কাজে এর প্রমান রেখে গেছেন। বিশেষ অতিথিরাও আলহাজ ইন্তাজির খানের অবদানের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র ফেঞ্চুগঞ্জের শিক্ষা প্রসারে আলহাজ ইন্তাজির খানের অবদান সীমাবদ্ধ থাকেনি পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক পরিসরেও তাঁর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা বন্ধ এবং নিয়োগ বৈষম্যের আন্দোলনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। পিপিএম হাই স্কুলের মাঠে আন্দোলনরত হাজার হাজার লোকের জনসভায় নেতৃত্ব দেন। যার ফলশ্রুতিতে সারকারখানা আজ স্থানীয় জনসাধারণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জের শালিসী ব্যক্তিগণের মধ্যমণি। তাঁর জীবদ্দশায় বড় এমন কোন শালিস বৈঠক নেই যার প্রধানের দায়িত্ব ঊনি পালন করেননি।
কাশিম আলী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বের পাশাপাশি উনি ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা উদ্দ্যোক্তা। তাঁর কর্মজীবনে ফেঞ্চুগঞ্জ শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করেছেন বলে শোনা যায়নি। তৎকালীন ব্রিটিশ পরবর্তীতে ইস্ট পাকিস্তানে রিভার ভিউ নামে একটি অফিসার্স ক্লাব ছিল (বর্তমানে বিলুপ্ত)। দীর্ঘদিন তিনি ঐ ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব ও পালন করেন।
মানিকোনা হাই স্কুল, পিপিএম হাই স্কুল, ঘিলাছড়া হাই স্কুলসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সূচনালগ্নে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁর উদ্যোগে কাশিম আলী হাই স্কুলের ফিল্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর পৈত্রিক ভূমি এবং নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকে খরিদকৃত জায়গা নিয়ে স্কুলের নামে রেকর্ড করে গিয়েছেন। এই মহতি জনকল্যাণমূলক এবং উদারতার কাজগুলি ফেঞ্চুগঞ্জবাসীর জন্য চিরকাল গর্বের হয়ে থাকবে।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সহ সভায় অতিথিদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন শাহাব আহমদ খান, পারভেজ আহমদ খান ,
ময়নুল আহমেদ খান, শিহাব উদ্দিন, ফারুক আহমেদ খান, শিপার আহমেদ খান, মাদরাসার সহকারী শিক্ষক হা. আব্দুল খালিক, মোকতাছিদ আহমদ খান আবীর সহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উপস্থিত ছিলেন মরহুম খান সাহেবের চতুর্থ ছেলে ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাও: মাহবুব আহমদ খান।
ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া হিফজুল কুরআন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হা.মাও.আবু সাঈদ মো.সেলিম সাহেবের সঞ্চালনায় মিলাদ শেষে মাদরাসা কমিটির সভাপতি হা.তরিকুল ইসলাম, প্রয়াত সোলেমান খান, প্রয়াত ইনতাজির খান, প্রয়াত এম এইচ খান হুরু মিয়া এবং সদ্যপ্রয়াত শায়খুল হাদিস আল্লামা হাবীবুর রহমানসহ সব পরলোকগতদের মাগফেরাতের জন্য বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন।
মাদ্রাসার সার্বিক উন্নয়নসহ সব দাতা এবং মাদ্রাসার খেদমতগারদের জন্যও দোয়া করা হয়।



