শাবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, কাল দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ৯:৪৮:১৫ অপরাহ্ন
সিলেট অফিস : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে এই বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। একইসাথে শিক্ষার্থীদের আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট পদ থেকে সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ পদত্যাগ করেছেন।
এ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী। আজ বিকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার পর এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পুলিশের লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেটে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশতজন আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ইটপাটকেলে ১০ পুলিশ সদস্য আহতের দাবি করেছেন এসএমপির উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ।
পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় পৌঁছে দেয়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টের সাথে শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে গত শনিবারও আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
ওইদিন শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ ওঠে। হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিসহ তিন দফা দাবি এবং ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে ফের উত্তাল হয়ে ওঠে শাবি ক্যাম্পাস।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নিজের কার্যালয় থেকে বাসভবনে যাওয়ার পথে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে ঘিরে ধরে। পরে উপাচার্য তাদের বেষ্টনী থেকে বের হয়ে এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে তালা লাগিয়ে দেন।
পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকজন শিক্ষক কয়েক দফা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে বিকাল চারটার দিকে শতাধিক পুলিশ সদস্য ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে সিআরটি সদস্যরাও ছিলেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ‘পুলিশ তুমি বাসায় যাও, আমার ক্যাম্পাস ছেড়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। এসময় শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়ে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে পৌঁছে দেয়।
পুলিশের হামলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক আহত হন বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে শাবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষার্থী তানহা তাহসীন, মিত্রা সংঘ, সজল কুন্ডু, মেহজাবিন পর্ণা, সজল কুণ্ডু, সাজেদুল ইসলাম সিজন, তাকিয়া ইসলাম, জুনায়েদ ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, মশিউর রহমান, ইরফান, রায়হান আহমেদ, মুনির হোসেন তালুকদার, সেলিম, তমাল, সিফাত আকাশ, জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব, হুমায়ূন কবির অপূর্ব প্রমুখ রয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।




