তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ২:২৯:১৫ অপরাহ্ন
সিলেট অফিস : তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেশে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিরাময় ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন। বুধবার (৬ জানুয়ারি) বিবিসি বাংলার কাছে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তার ধারণা, মানুষ এখনও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, কিন্তু ওমিক্রনের সংক্রমণ শক্তি বেশি হওয়ায় আরও বেশি সংখ্যক লোক আক্রান্ত হবে।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে ব্যাপকহারে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে, বাংলাদেশ বা সাউথ এশিয়ান অঞ্চলে ওমিক্রন সংক্রমণ এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু যেহেতু আমাদের দেশে অনেক মানুষ যাতায়াত করেন, তাই বন্দরে স্ত্রিনিং করে এটা আটকানো কঠিন।’
মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভাইরাসটির পরিবর্তন হচ্ছে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ১০টি সংক্রমণ পাওয়া গেছে। যে কোনো সময় এটা বেড়ে যেতে পারে।’ বিশ্বে ওমিক্রনের তথ্য উপাত্ত এবং ভাইরাসটির দ্রুত বিস্তার ক্ষমতা এই দুটি বিষয় মিলিয়ে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, আগামী তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সারা বাংলাদেশে হয়তো ছড়িয়ে পড়তে পারে ওমিক্রন।
‘আমারা হয়তো এখন পাচ্ছি একটা দুইটা করে। আগামী তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেখবো, ব্যাপক করোনাভাইরাসে রোগী ওমিক্রনে আক্রান্ত’ তিনি বলেন।
তবে তিনি ধারণা করছেন, ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়লেও হাসপাতালে হয়তো ভর্তি হতে হবে না। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা আশা করছি, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা কম হবে। অন্যান্য দেশে ওমিক্রনের মৃদু সংক্রমণ হলেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর হার কম।’
ওদিকে, কোভিডের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছে উদ্বেগ। দেশে এখন পর্যন্ত ১০ জনের নমুনায় ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী যে কোনো সময়ে বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব মো. লোকমান হোসেন মিঞা।
৫ জানুয়ারি রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন যে কোনো সময় হতে পারে। বিধিনিষেধ নিয়ে প্রজ্ঞাপন হয়তো আজকে কালকের মধ্যেই পেয়ে যাবেন।’
এদিকে, দেশে গত এক সপ্তাহ ধরেই কোভিড শনাক্তের হার বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ৩ জানুয়ারি ওমিক্রন প্রতিরোধে এক বিশেষ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অমিক্রন নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে কিছু আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্থল ও বিমানবন্দরগুলোতে ইতোমধ্যে স্ক্রিনিং বাড়ানো এবং মজবুত করা হয়েছে, সেখানে অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও চালু হয়েছে। কোয়ারেন্টিনেও আরও তাগিদ দেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এবার ঢিলেঢালা কোয়ারেন্টিন আমরা চাচ্ছি না। সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সংখ্যা যেন সীমিত করা হয়, এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। নীতিগতভাবে কিছুটা পজিটিভ আলোচনা হয়েছে।’