‘কক্সবাজারের শ্লীলতাহানী বর্তমান দুঃশাসনেরই একটি চালচিত্র’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ৩:৫৪:১৮ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক : কক্সবাজারে স্বামী সন্তানকে জিম্মি করে বেড়াতে আসা গৃহবধুকে দলবেধে শ্লীলতাহানির ঘটনা বর্তমান দুঃশাসনেরই একটি চালচিত্র, বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনা শুধু মর্মান্তিকই নয়, দেশবাসীকে বেদনাহত ও আতঙ্কিত করে তুলেছে। দেশবাসী যেন অন্ধকার প্রতিক্রিয়া, দাসত্ব ও মৃত্যুপুরীর আবহের মধ্যে বসবাস করছে। স্থানীয় এমপি সাইমুন সারোয়ার কমল এবং জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে ঐ সমস্ত দুস্কৃতিকারী যারা ওই অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের সঙ্গে ছবি পাওয়া গেছে। দুস্কৃতিকারীদের একজন নাম জয়। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামও স্বীকার করেছে জয় ছাত্রলীগের কর্মী। সে সংগঠনের নানা কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সরকারি দলের এই নিকৃষ্ট নমুনা নিয়ে আর কি বলা যেতে পারে। নির্যাতিত নারীর আর্তনাদ, হাহাকার ক্ষমতাসীনদের বোধোদয় ঘটাতে পারবে কি?
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিরোধী দলের প্রতি পেশী প্রদর্শন, মামলা-হামলা, গুপ্তহত্যার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ওপর প্রতিনিয়ত নির্মমভাবে নির্বিচারে নেমে আসে পাশবিকতা। ক্ষমতাসীনদের পৃষ্ঠপোষকতায় এখন শকুন ও হায়েনাদের জয়জয়কার। ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ‘জেনারেল লাইসেন্স’ দেয়ার কারণে দেশজুড়ে পৈশাচিক, লোমহর্ষক ঘটনার এক ভয়াবহ দুর্দিন বিস্তার লাভ করেছে। কক্সবাজারে গৃহবধুর ওপর নির্মম পাশবিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
গতরাতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা, আহতদের সুস্থতা কামনা করে তিনি বলেন, এ অগ্নিকাণ্ডের দগ্ধ হয়েছেন বহু যাত্রী। নিহতের সংখ্যা ৩৬ এর বেশী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগুনে দগ্ধ অসংখ্য আহতরা হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনা হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী। আমাদের শোক জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
রিজভী বলেন, জাতি এই বেদনার্ত ঘটনায় বিমূঢ় ও শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। বিনা ভোটে জবাবদিহিহীন সরকারের কারণেই সারাদেশে সর্বত্র অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা রাজত্ব করছে। জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না বলেই সড়ক ও নৌপথসহ সকল জনপথেই নৈরাজ্য বিরাজ করছে। চারশো যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করা লঞ্চটি অগ্নিকাণ্ডের সময় হাজারখানেক যাত্রী অবস্থান করছিল, এটি কিভাবে সম্ভব? নৌ-পরিবহনে দুর্বৃত্তদের দাপট বলেই কোন নিয়ম-শৃঙ্খলাকেই তোয়াক্কা করা হয় না। আর সে কারণেই জীবন দিতে হচ্ছে নিরীহ যাত্রীদের।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।