প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সত্বেও বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনে ধীরগতি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ৩:৩০:৩৪ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পরেও সহসাই বিমানবন্দরে বসছে না প্রবাসী ও বিদেশগামীদের নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় র্যাপিড পিসিআর ল্যাব। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সাতটি ল্যাবকে দ্রুততম সময়ে এবং স্বল্প খরচে নমুনা পরীক্ষার জন্য বিবেচনা করে অনুমোদন দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করতে পারেনি বিমানবন্দরে। ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা বুঝে নিতে গেলে তাদের জানানো হয়েছে নতুন নির্দেশনা।
ল্যাবগুলোর অভিযোগ একটিমাত্র প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার পাঁয়তারার কারণে বিলম্ব হচ্ছে ল্যাব স্থাপনের পুরো প্রক্রিয়া। যদিও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, অভিযোগ সত্য নয়। তবে আবুধাবি থেকে আসা নতুন নির্দেশনার কারণে রোববারের (১৯ সেপ্টেম্বর) আগে ল্যাব স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না।
৬ সেপ্টেম্বর দেশের তিন বিমানবন্দরে জরুরিভিত্তিতে করোনা সংক্রমণ শনাক্তকরণের আরটি-পিসিআর টেস্ট চালুর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর টেস্ট চালু করতে সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্টরা অচিরেই কাজ শুরু করবেন।’
তবে এ নির্দেশনার পরেও দ্রুতই কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী ইমরান আহমেদ ‘ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ল্যাব স্থাপনের জন্য অনুমতি দেওয়ার কথা জানালেও পরবর্তীতে তাদের আবেদন পত্রে থাকা নানা রকমের অসঙ্গতির কারণে বিষয়টি বিলম্ব হয়।
দেশের বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কাউকাউসের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে আগ্রহী বেসরকারি ল্যাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বৈঠকে পিসিআর মেশিন স্থাপনের জন্য আবেদন করা ২৪টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টি ল্যাব কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন। তারা ল্যাব স্থাপনে নিজেদের প্রস্তাবনা ও নমুনা পরীক্ষার খরচ জানায়। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে ও কত মেশিন দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করতে পারবে, সে বিষয়েও তারা জানান অধিদফতরকে। পরে অধিদফতর বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করে।
অনুমোদন পাওয়া ল্যাবগুলো হলো— স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেড ঢাকা, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক।
১৫ সেপ্টেম্বর ল্যাবগুলো অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ১৬ সেপ্টেম্বর ল্যাবগুলোর পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা বুঝে নেওয়ার জন্য যান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তবে এ দিন তাদের জানানো হয় নতুন একটি নির্দেশনার কথা।
আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তা মো. সুমন বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী চার দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের কাজ শুরু করার জন্য গিয়েছিলাম। তবে আমাদের কোনো জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আমাদের জানানো হয়েছে আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে নতুন একটি নির্দেশনা এসেছে। সেখানে আমাদের একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্ল্যান বা এসওপি জমা দিতে বলা হয়েছে। এতো অল্প সময়ে সেটা আজই দেওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ এ বিষয়ে আমাদের আগে জানানো হয়নি। ছয়টা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কিছু দিতে পারেনি। শুধুমাত্র ডিএমএফআর ল্যাব এটি নিয়ে প্রস্তুত ছিল।’