ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রামে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ আগস্ট ২০২১, ৪:০১:৪০ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীতে করোনাভাইরাসের ভারতীয় তথা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। করোনাভাইরাসের ৩০টি নমুনার পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচনের পর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসে চট্টগ্রামে আক্রান্তদের ৯৪ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। এই ভ্যারিয়েন্ট উচ্চ সংক্রমণশীল হওয়ায় কোনো পরিবারে একজন আক্রান্ত হলে অন্যরাও দ্রুত আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) যৌথভাবে এ গবেষণা কার্যক্রম চালিয়েছে। সিভাসু’র অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, শারমিন চৌধুরী, চিকিৎসক ইফতেখার আহমেদ রানা, ত্রিদীপ দাশ, প্রণেশ দত্ত, সিরাজুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ নিজামী এবং বিসিএসআইআর’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. সেলিম খান ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোরশেদ হাসান সরকার এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন।
অধ্যাপক পরিতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কারও শরীরে তীব্র লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, আবার কারও মধ্যে মৃদু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে আমরা ভাইরাসের জিনোমের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি না, সেটি নিয়ে গবেষণা শুরু করি। এই গবেষণা করতে গিয়ে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীতে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তীব্র সংক্রমণের বিষয়টি দেখতে পেয়েছি। তবে মূল গবেষণা এখনো চলমান রয়েছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, গবেষণার অংশ হিসেবে গত ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী ৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১৫ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ৩০টি নমুনার ১৫টি সিটি করপোরেশন এলাকার এবং বাকি ১৬টি গ্রামাঞ্চলের। এর মধ্যে ১২ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী। ৩০টি নমুনায় সংগৃহীত ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করে বিসিএসআইআরের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর আগেও করোনাভাইরাসের ২২টি নমুনার পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করেছিল সিভাসু।
গবেষণায় পাওয়া ফলাফল সম্পর্কে অধ্যাপক পরিতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘গবেষণার এ পর্যায়ে আমরা চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হয়েছি যে চট্টগ্রামে গত এক মাসে আক্রান্তদের ৯৪ শতাংশই ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে সংক্রমিত। চীনের যে ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে দেশে সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তার অস্তিত্ব এখন তেমন নেই। ওই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পেয়েছি মাত্র তিন শতাংশ। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইউকে আলফা ভ্যারিয়েন্টেরও অস্তিত্ব আছে, তবে সেটিও মাত্র তিন শতাংশের মতো। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও একই ধরনের গবেষণা হয়েছে। সেখানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ পাওয়া গেছে ৯৮ শতাংশ।’