খালেদা জিয়া এভারকেয়ারের সাত তলার ৭২০৩ নম্বর কেবিনে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১:৫৩:৫৫ অপরাহ্ন
অনুপম ডেস্ক: করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সাত তলার ৭২০৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় দফার পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ হওয়ার পর কিছু শারীরিক পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল বোর্ড। মঙ্গলবার ২৭ এপ্রিল রাতে গুলশানের ভাড়াবাসা ফিরোজা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসনকে। সেখানে সিটিস্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইকো, ইসিজিসহ শারীরিক কিছু পরীক্ষা শেষে ভর্তির সিদ্ধান্ত হয়।
বেগম জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির বিষয়ে চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে তার, কিছু বাকি রয়েছে। বাকি পরীক্ষাগুলো করার জন্য হাসপাতালে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) রাখা হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। করোনার কোন উপসর্গ নেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। নানা পরীক্ষার সুবিধার্থেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রাত ১২টা পর্যন্ত সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাম, ইকো-ইসিজিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসনের। তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে সাত তলায় ৭২০৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, মেডিকেল বোর্ড ম্যাডামের কয়েকটি পরীক্ষার জন্য বলেছে। সেজন্যই তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ম্যাডাম করোনা পজেটিভ হলেও তার কোনো উপসর্গ নেই। তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ভালো আছেন।
এর আগে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাসভবন ফিরোজা থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। হাসপাতালে খালেদা জিয়ার পরীক্ষার সময় সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক টিমের অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন , ডা. মোহাম্মদ আল মামুন, একজন নার্স ও গৃহপরিচারিকা ফাতেমা।
এছাড়াও ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, এসএম জাহাঙ্গীর, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
করোনায় আক্রান্তের পর এর আগে গত ১৫ এপ্রিল প্রথমবার একই হাসপাতালে সিটিস্ক্যান করা হয়। তখন তার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, রিপোর্টে ফুসফুসে প্রভাব ক্লিনিকালি অত্যন্ত মিনিমাম। যেটা মাইল্ড পর্যায়েও পড়ে না। রিপোর্ট অনেক ভালো।
গত বছর ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে দুই মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর আরও দুইদফা তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। কারাগার থেকে মুক্তির পর তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একদিনের জন্যও তিনি বের হননি। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম বারের মতো চিকিৎসার জন্য বাসার বাইরে বের হন তিনি।
খালেদা জিয়ার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু করে। ‘ফিরোজা’র বাসায় খালেদা জিয়া ছাড়াও আরও ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হন।
বিএনপি চেয়ারপারসন আক্রান্তের ১৬ দিন পর গত শনিবার করোনা পরীক্ষা করানো হলে আবারও পজেটিভ আসে। ঐদিন তার বাসভবনের ১৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। দশ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও খালেদা জিয়াসহ চার জনের পজেটিভ আসে।