প্রায় ৬০০০ কোটি টাকায় বিক্রি হচ্ছে পিআইএ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২১:২০ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বা পিআইএ-এর মালিকানা অবশেষে বেসরকারি খাতে হস্তান্তর হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সরাসরি সম্প্রচারিত এক নিলামে আরিফ হাবিব কর্পোরেশনের নেতৃত্বাধীন একটি কনসোর্টিয়াম সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জয়ী হয়েছে। তারা এয়ারলাইন্সটির ৭৫ শতাংশ শেয়ারের বিনিময়ে ১৩৫ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি বা প্রায় ৪৮২-১৪ মিলিয়ন ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা) প্রস্তাব দিয়েছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের বিমান খাতের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়ায় এক বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জিত হলো।
সরকারের বেসরকারিকরণ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ আলী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে নতুন মালিকপক্ষ এয়ারলাইন্সটির পরিচালনাভার গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই নিলামের জন্য সরকার ১০০ বিলিয়ন রুপি ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করলেও আরিফ হাবিব কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবিত দর সেটি ছাড়িয়ে গেছে। চূড়ান্ত প্রক্রিয়া অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মন্ত্রিসভার অনুমোদন শেষে দুই সপ্তাহের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সকল আর্থিক ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন ⤵
নিলামের এই চুক্তির ফলে পাকিস্তান সরকার নগদ ১০ বিলিয়ন রুপি পাবে এবং বাকি ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা নিজেদের হাতে রাখবে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ বিলিয়ন রুপি।
জয়ী কনসোর্টিয়ামে আরিফ হাবিব কর্পোরেশন ছাড়াও রয়েছে সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাতিমা ফার্টিলাইজার, শিক্ষা নেটওয়ার্ক সিটি স্কুলস এবং আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠান লেক সিটি হোল্ডিংস লিমিটেড। ভবিষ্যতে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত ফৌজি ফার্টিলাইজার কোম্পানিও এই কনসোর্টিয়ামে অংশীদার হিসেবে যুক্ত হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।
মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে লোকসানে থাকা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তুকি কমাতে এই বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
তবে বিক্রয় চুক্তিতে কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ শর্তারোপ করা হয়েছে। নতুন মালিকপক্ষকে মালিকানা গ্রহণের পরবর্তী ১২ মাস পর্যন্ত সকল বর্তমান কর্মীদের চাকরি বহাল রাখতে হবে এবং তাদের বর্তমান চুক্তির শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিক্রির মূল উদ্দেশ্য শুধু মালিকানা বদল নয়, বরং ধুঁকতে থাকা এই সংস্থায় নতুন পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে একে পুনরায় লাভজনক করে তোলা।



