ফয়সালদের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটির অস্বাভাবিক লেনদেন’: সিআইডি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১:২৭:২৯ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডে প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে সিআইডি বলেছে, তারা বিষয়টি নিয়ে মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত শুরু করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য পর্যালোচনা করে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের সময় বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই উদ্ধার হয়, যা গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ শুরু করে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, প্রাপ্ত চেক বইগুলোতে অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এসব চেকের মধ্যে চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন না হওয়া রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।
প্রাথমিক বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে সিআইডি বলেছে, অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মূল অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে দ্রুত বাজেয়াপ্ত করার জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সিআইডি। একই সঙ্গে এই অর্থের মূল সরবরাহকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন ⤵
হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন এবং অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল কি না, সে বিষয়েও সিআইডির একাধিক তদন্ত দল কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলা চালানো হয়। মোটরসাইকেলে এসে খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় এবং বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। মামলায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী মো. মুফতি নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সহযোগী মো. কবির, সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। তাদের মধ্যে হুমায়ুন কবির ও হাসি বেগম আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। রিমান্ড শেষে নুরুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং অন্য আসামিরা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।



