সন্তানকে বশে আনতে ‘জিন চক্র’র কাছে খোয়ালেন ৩৫ লক্ষ টাকা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৬:৪০ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: দেশের রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় এক নারীকে তার সন্তানের অবাধ্য আচরণ নিয়ন্ত্রণের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৩৫ লাখ টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত বুধবার রাজধানীর জিগাতলা ও রায়েরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে এবং বৃহস্পতিবার ভোরে যশোরের চৌগাছা থানার যাত্রাপুর এলাকা থেকে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো মো. রাকিব মাতব্বর, মো. আলাউদ্দিন ব্যাপারী, মো. মহিউদ্দিন ব্যাপারী, মো. মানিক, মো. ফরহাদ হোসেন ও মো. মেহেদী হাসান। তাদের কাছ থেকে ১৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. জাহাঙ্গীর কবির এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ১৯ আগস্ট এলিফ্যান্ট রোডের ভাড়া বাসায় বসে ‘কোরআনিক শিফা’ নামের ফেসবুক পেজে ‘অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করার উপায়’ শিরোনামের একটি ভিডিও চোখে পড়ে ভুক্তভোগী নারীর। পরে ভিডিওতে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে নিজের পরিচয় ‘তান্ত্রিক’ বলে দাবি করে এক ব্যক্তি জানান—জিনের সাহায্যে সন্তানের সব সমস্যা দূর করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন ⤵
শুরুতেই বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের সরঞ্জাম কেনার নাম করে ৫ হাজার ৫০০ টাকা বিকাশে নেন প্রতারক। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে ‘কালো জাদু’ চলার কথিত ছবি পাঠিয়ে তাকে আরও বিশ্বাস করানো হয়। পরদিন চক্রের আরেক সদস্য জিনের পরিচয়ে কথা বলে শিশুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় সৃষ্টি করেন এবং সমাধানের জন্য ৪৯ হাজার টাকা দাবি করেন। সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই নারী টাকা পরিশোধ করেন। এরপর ২১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় মোট ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার ১০৫ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
একপর্যায়ে নিজের সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে বুঝতে পেরে নারীটি নিউমার্কেট থানায় গিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহার গ্রহণের পর এসআই মো. ফিরোজ আহম্মেদ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করেন এবং শেষ পর্যন্ত চক্রের ওই ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিয়ে জব্দ করা মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত পরীক্ষা করে চক্রটির নেটওয়ার্ক ও আরও সংশ্লিষ্টদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।




