স্বস্তির বার্তা ভূমিকম্প নিয়ে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ৬:০৩:২০ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: দেশে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্পে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে এ নিয়ে সাধারণ জনগণদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম।
বারবার ভূমিকম্প হওয়ার বিষয়টি সিসমোলজির দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাভাবিক বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পরপর ঘটে যাওয়া ছোট কম্পনগুলো মূলত ‘আফটার শক’। যা প্রধান কম্পন বা ‘মেইন শকের’ শক্তি নির্গমনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এমন ছোট কম্পন অনুভূত হতে পারে। তবে আমাদের অবজারভেশন অনুযায়ী, আপাতত বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকের এই বক্তব্য অনুযায়ী ২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত “আফটার শক” অথবা মৃদু ভূমিকম্প হওয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে।
পরিচালক বলেন, ‘গত পরশুদিনের কম্পনটিকে আমরা মেইন শক হিসেবে মনে করি। একটি বড় আর্থকোয়েকের আগে প্রি-শক এবং পরে আফটার শক হয়ে থাকে। যেসব ছোট ছোট কম্পনগুলো অনুভূত হয়েছে, তা হলো আফটার শক। একটি ইভেন্ট (ভূমিকম্প) ঘটার পরে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ছোট ছোট কম্পন হতে পারে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
পরপর কম্পনের পর নরসিংদী ও বাড্ডাসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এর মধ্যে কিছু গুজবের খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, ‘আর দুই ঘণ্টা পর বড় ভূমিকম্প হবে’, যা মানুষের মধ্যে আরও বেশি ভয় সৃষ্টি করে।
বিএমডির পরিচালক এই গুজবকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এ ধরনের ভবিষ্যৎ বাণী কেউ দিতে পারে না। ভূমিকম্পের ফোরকাস্ট বা পূর্বাভাসের কোনো সুযোগ নেই। আমরা বারবার বলছি, বাংলাদেশ মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টকে ফলো করুন। ধানমন্ডিতেও নাকি ১২টার সময় লোকজনকে বাইরে যেতে বলা হয়েছে। এখন যেগুলো হচ্ছে, তা কেবলই আফটার শক। এটি সবসময় মূল শকের চেয়ে ছোট হবে এবং অলরেডি বেশ কয়েকটি হয়ে গেছে, হয়তো আর নাও হতে পারে।’
আরও পড়ুন ⤵
পরিচালকের মতে, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান তিনটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে হওয়ায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি সব সময়ই থাকে। এই প্লেটগুলো হচ্ছে, ইউরেশিয়ান প্লেট (উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত), ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেট (যার ওপর বাংলাদেশের অবস্থান) এবং বার্মা মাইক্রোপ্লেট (পূর্বে অবস্থিত)। যে কোনো বড় ভূমিকম্প সাধারণত প্লেট বাউন্ডারি বা ফল্ট লাইনের আশেপাশে হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক কম্পনগুলো সরাসরি প্লেট বাউন্ডারিতে না হলেও এগুলো হয়তো মূল ফল্ট লাইনের সাবফল্ট হিসেবে আসছে বলে পরিচালক জানান।
বিএমডি জনগণের প্রতি শান্ত থাকার এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু একটি ৫.৭ মাত্রার কম্পনকে ভূখণ্ড অ্যাবজর্ব করতে পেরেছে, তাই ৩ বা ৪ মাত্রার আফটার শক নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আফটার শকগুলো সাধারণত মেইন শকের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস সংক্রান্ত কোনো গুজবে কান না দিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।




