প্রফেসর ডা. এ. কে. এম. হাফিজের মৃত্যুতে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের শোক
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৪:৩১ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি, সিলেটের খ্যাতনামা নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এ. কে. এম. হাফিজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
গ্রেটার সিলেটের প্যাট্রন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. হাসনাত এম হোসেন এমবিই-এর ছোট ভাই ছিলেন প্রফেসর ডা. এ. কে. এম. হাফিজ। তাঁর আত্মার মাগফেরাত ও জান্নাতবাসের দোয়া করার জন্য দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকলের প্রতি তিনি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে প্রফেসর ডা. এ. কে. এম. হাফিজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন গ্রেটার সিলেটের প্যাট্রন বিশিষ্ট সাংবাদিক কে. এম. আবু তাহের চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট ইউকের সাবেক চেয়ারপার্সন নুরুল ইসলাম মাহবুব, প্রাক্তন সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম কয়সর, কেন্দ্রীয় কনভেনর মোহাম্মদ মকিস মনসুর, কো-কনভেনর মসুদ আহমদ, সদস্য সচিব ডা. মুজিবুর রহমান, ট্রেজারার এম. আসরাফ মিয়া, সাউথ ইস্ট রিজিওনাল কনভেনর হারুনুর রশিদ, কো-কনভেনর জামাল হোসেন, সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম, ট্রেজারার হেলেন ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এক যৌথ শোকবার্তায় তাঁরা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রফেসর ডা. এ. কে. এম. হাফিজ সিলেট নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর স্থায়ী নিবাস সুনামগঞ্জ জেলায়। তিনি সিলেট মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৭ম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা (ইএনটি) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং সিলেট ওয়াসার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দেশের একজন প্রখ্যাত ও জনপ্রিয় চিকিৎসক হিসেবে তিনি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সিলেট জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে ১৯৯৭–৯৯ ও ১৯৯৯–২০০১ এই দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ১৯৭৭–৭৮ সালে বিএমএ সিলেট অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান, নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ইএনটি বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি সিলেট সিটি ক্লিনিকের চেয়ারম্যান এবং সিলেট ও দেশের নানা প্রগতিশীল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক দীর্ঘমেয়াদি করদাতা হিসেবে বিশেষ সম্মাননা পদকেও ভূষিত হন।
আরও পড়ুন—
♦ অজিত দোভাল বললেন বাংলাদেশ-নেপাল- শ্রীলঙ্কায় সরকার পতনের কারণ
♦ মৌলভীবাজারে অবরোধ সিলেটের রেলপথ সংস্কারসহ ৮ দাবিতে
♦ লন্ডনে জামায়াতের আমির: আমরা যা করতে পারব তাই বলছি
শোকবার্তায় গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের কেন্দ্রীয় কনভেনর ও ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মকিস মনসুরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন,
“বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি, সুনামগঞ্জের আলোকিত মানুষ ডা. এ. কে. এম. হাফিজ ছিলেন একজন নির্ভরযোগ্য ও মানবিক চিকিৎসক। তিনি কর্মকে সেবার ব্রত হিসেবে আজীবন ধারণ করেছেন। জীবনের সর্বক্ষেত্রে তিনি সততা, সদালাপিতা ও মানবতার কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন।”
তাঁরা মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন, যেন মরহুমের দুনিয়াবী সব ভুলত্রুটি ক্ষমা করে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি ও ধৈর্য প্রদান করেন।
এছাড়াও মরহুমের মৃত্যুর খবর শুনে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ শাহজালাল মসজিদে জুমার নামাজের পর অনুষ্ঠিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা কাজি ফয়জুর রহমান।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর গুলশানে মরহুমের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাঁর দ্বিতীয় জানাজা আজ (শনিবার) বাদ আসর সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
