২৫ বছরের সেবার যাত্রা: কেয়ারার্স সেন্টার টাওয়ার হ্যামলেটস-এর রজতজয়ন্তী উদযাপন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুন ২০২৫, ১০:৫৬:৫৩ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস: কেয়ারার্স সেন্টার টাওয়ার হ্যামলেটস তাদের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১১ জুন ২০২৫ এক হৃদয়গ্রাহী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রজতজয়ন্তী পালন করেছে। এই বিশেষ আয়োজনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মেয়র, ক্যাবিনেট মেম্বার, কাউন্সিলর, স্টাফ, স্বেচ্ছাসেবক এবং সারা বরোর অসংখ্য নিরলস কর্মী ও পরিচর্যাকারীরা অংশ নেন।
সেন্টারের নিজস্ব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে নিরুপায় আত্মীয়দের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও দায়িত্বে পরিচর্যা করা ‘অবৈতনিক কেয়ারারদের’ প্রতিসম্মান জানানো হয়—যারা আর্থিক পারিশ্রমিক ছাড়াই প্রিয়জনদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।
সভাপতি হাসান চৌধুরী অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে সেন্টারের দীর্ঘ পথচলার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আজকের দিনটি কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের জন্মদিন নয়, এটি একটি ভালোবাসা ও দায়িত্বের উত্তরাধিকার উদযাপনের দিন। এই ২৫ বছরে যে সেবার বন্ধন গড়ে উঠেছে, তা আমাদের সকলের ঘাম, সময় এবং মমতার ফসল।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র লুৎফর রহমান, ক্যাবিনেট সদস্য কাউন্সিলর সাবিনা আখতার, ক্যাবিনেট সদস্য কাউন্সিলর বদরুল চৌধুরী, ওভারভিউ ও স্ক্রুটিনি কমিটির চেয়ার কাউন্সিলর আব্দুল ওয়াহিদ, কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান, ডাইরেক্টর অফ সার্ভিসেস ড্যানিয়েল হুটসন, কেয়ারার ওয়েলবিং ম্যানেজার টনি কলিন্স এবং হেলথ, অ্যাডাল্টস অ্যান্ড কমিউনিটি বিভাগের কর্পোরেট ডিরেক্টর জর্জিয়া চিম্বানি। সকলেই অবৈতনিক পরিচর্যাকারীদের প্রতি তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন ও প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মেয়র লুৎফর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমাদের সমাজে অবৈতনিক কেয়ারাররা এক অনন্য ভূমিকা পালন করছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ওমর্যাদা প্রদর্শন শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের প্রশাসনের অগ্রাধিকার।”
এক স্মারক মুহূর্তে মেয়র, কেয়ারার্স সেন্টারের চেয়ার, ট্রাস্টি, সিইও, স্টাফ, স্বেচ্ছাসেবক এবং কেয়ারাররা মিলে ২৫ বছর পূর্তির কেক কাটেন—যেটি অংশীদারিত্ব ও অগ্রগতির প্রতীক হয়ে রইল।
কেয়ারার্স সেন্টার টাওয়ার হ্যামলেটস দীর্ঘদিন ধরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিয়ে আসছে, যার মধ্যে রয়েছে ওয়ান টু ওয়ান পরামর্শ অ্যাডভোকেসি, পিয়ার সাপোর্ট গ্রুপ, স্বাস্থ্য ও মানসিক কল্যাণ বিষয়ক কর্মশালা, অবসরকালীন কার্যক্রম এবং কিশোর কেয়ারারদের জন্য বিশেষ সহায়তা। হাজারো মানুষের জীবনে এই প্রতিষ্ঠান আশার আলো হয়ে উঠেছে। গত বছর সংগঠনটি ২০০০ এর বেশি কেয়ারারসহ তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে সহযোগিতা করেছে।
সিইও গ্রাহাম কলিন্স কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আপনাদের অক্লান্ত শ্রম ও আন্তরিকতা প্রতিদিন অসংখ্য কেয়ারারকে উৎসাহিত করে। আপনারাই এই প্রতিষ্ঠানের প্রাণ।”
ভবিষ্যতের প্রতি দৃষ্টিপাত করে চেয়ার বলেন, “অবৈতনিক কেয়ারাররা কোনো প্রান্তিক গোষ্ঠী নন—তাঁরাই আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড। ভবিষ্যতে পাঁচজনের একজন এই দায়িত্ব পালন করবেন—এমন বাস্তবতায় আমাদের কাজ আরও বিস্তৃত হতে হবে।”
সভাপতি হাসান চৌধুরী তাঁর সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, “প্রত্যেক কেয়ারার গুরুত্বপূর্ণ, আপনারা একা নন আমরা আপনাদের পাশে আছি।”
অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে এক অনুপ্রেরণামূলক বার্তা, ঐক্যবদ্ধতা এবং সেবার নতুন শপথের মধ্য দিয়ে—যা কেয়ারার্স সেন্টারের মূল মূল্যবোধ সহানুভূতি, যত্ন ও কমিউনিটির প্রতিফলন।



