নির্বাচিত হলে মেয়রের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে: নিউহ্যামের মেয়র প্রার্থী ফরহাদ হোসেন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:০৬:৩১ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস:
আগামী বছরের ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য নিউহ্যাম কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ফরহাদ হোসেন। নির্বাচিত হলে তিনি হবেন যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথম লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নির্বাহী মেয়র।
নিউহ্যামের প্লাস্টো এলাকায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা ফরহাদ হোসেনের পৈত্রিক নিবাস সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার উপরপুর ইউনিয়নের নরপুর গ্রামে। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে দলমত, জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে মেয়রের দরজা নিউহ্যামের সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
গত ১৫ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ম্যানর পার্কের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ-এর জেনারেল সেক্রেটারি ও সিডব্লিউইউ ট্রেড ইউনিয়ন মাউন্ট প্লেজেন্ট শাখার পলিটিক্যাল সেক্রেটারি কাউন্সিলর সৈয়দ আবুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের চেয়ারম্যান সাবেক কাউন্সিলর খলিল কাজী ওবিই এবং ট্রেড ইউনিয়ন সেক্রেটারি কাউন্সিলর আব্দুল আজিজ তকি।
সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ হোসেন তাঁর নির্বাচনী পাঁচ দফা অঙ্গীকার ঘোষণা করেন। এগুলো হলো— নিউহ্যাম বোরোর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে জরুরি পদক্ষেপ, পার্কিং সমস্যার স্থায়ী সমাধান, বাসিন্দাদের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।
তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির দীর্ঘদিনের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, “একটি পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ নিউহ্যাম গড়তে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমালোচনা করে ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমার প্রতিপক্ষরা বিভাজন ও নেতিবাচক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমি তার বিপরীতে ইতিবাচক রাজনীতির পথে হাঁটছি। ইতিবাচক রাজনীতিই মানুষের জীবনমানের প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “এই বোরো আমাকে জীবনের সব সুযোগ দিয়েছে, আমাকে গড়ে তুলেছে। এবার আমি নিউহ্যামের জন্য স্থিতিশীল ও গঠনমূলক নেতৃত্ব দিতে চাই।”
উল্লেখ্য, ফরহাদ হোসেন ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আট বছর নিউহ্যাম কাউন্সিলে লেবার দলীয় কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ক্যাবিনেট মেম্বার হিসেবে কমিউনিটি সেফটির দায়িত্বে ছিলেন এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ে অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে অপরাধ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কাউন্সিলের পেনশন স্কিমের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি তহবিল ১.৪ বিলিয়ন পাউন্ডে উন্নীত করেন এবং বছরে প্রায় ৪ মিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় নিশ্চিত করেন।
শিক্ষাজীবনে ফরহাদ হোসেন পোর্টওয়ে প্রাইমারি স্কুল, লিস্টার কমিউনিটি স্কুল ও নিউহ্যাম সিক্সথ ফর্ম কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি কলেজটির প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে তিনটি এ-গ্রেড অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। বর্তমানে তিনি আর্কাডিসে প্রিন্সিপাল কনসালট্যান্ট হিসেবে লোয়ার থেমস ক্রসিং প্রকল্পে কর্মরত।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। তাঁর পিতা মরহুম জয়নাল আবেদীন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বালাগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রেন্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলর পারভেজ আহমদ, কাউন্সিলর ড. জামাল উদ্দিন, সাবেক ডেপুটি লিডার লুৎফুর রহমান ওবিইসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।


