মিশিগানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যাত্রা শুরু
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:৪৭:৪৯ অপরাহ্ন
কামরুজ্জামান হেলাল, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র।
দরজা খুলে অনুষ্ঠানস্থলের গোল টেবিলে বসার আগেই ভেসে আসে পরিচয়ের কণ্ঠ “আমি ঢাকার জুয়েল”। এভাবেই সবার সঙ্গে পরিচিত হন আবু হোসাইন জুয়েল। অন্যদিকে, প্রায় ৪৮ বছর আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছেড়ে দুই মহাদেশ পাড়ি দিয়ে আজকের এই মিলনমেলায় হাজির হন বেলায়েত হোসাইন। স্মৃতি, নস্টালজিয়া আর বন্ধুত্বপূর্ণ তর্ক রেললাইনের ওপারের হল ভালো না এপারের এসব প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্য দিয়েই শুরু হয় এই আয়োজন। প্রকৃতপক্ষে, এটি ছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল গ্রাজুয়েটদের নিয়ে এক আবেগঘন মিলনমেলা।
হাড় কাঁপানো শীত ও তুষারপাত উপেক্ষা করে গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে সবাই মিলিত হন মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ওয়ারেন নগরীর একটি বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৫ সালের গ্রাজুয়েট থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত গ্রাজুয়েটরাও এই আয়োজনে অংশ নেন। অনেকেই একে অপরকে আগে থেকে চিনলেও, সংগঠিতভাবে সবাই একসঙ্গে বসার সুযোগ এটাই ছিল প্রথম। কয়েক ঘণ্টার স্মৃতিচারণ, গল্প ও আড্ডা পরিণত হয় এক আনন্দঘন অভিজ্ঞতায়। এই মিলনমেলার মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্রের যাত্রা শুরুর কথা। একই সঙ্গে ঘোষণা করা হয় সংগঠনের প্রথম সংক্ষিপ্ত কমিটি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের মোট ১৫ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। কাজ ও পারিবারিক ব্যস্ততার কারণে আরও কয়েকজন অংশ নিতে না পারলেও, ভবিষ্যতে মিশিগান ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসরত বাকৃবির গ্রাজুয়েটদের খুঁজে সংগঠনে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দুপুরের খাবারের আগে সবাই নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন কীভাবে আমেরিকায় আসা, বর্তমানে কী পেশায় নিয়োজিত, পরিবার-পরিজনের পরিচয় ইত্যাদি।
আরও পড়ুন ⤵
অনুষ্ঠানে উপস্থিত উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন- ১৯৬৮ ব্যাচের কৃষি অনুষদের বেলায়েত হোসেন, যিনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভর্তি হওয়া পাঁচজন নারী শিক্ষার্থীর একজন ফাতেমা হোসাইন লিনা।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- ১৯৭৮ ব্যাচের কৃষি প্রকৌশলের শিক্ষার্থী ও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের অধ্যাপক ড. কামরুল মজুমদার, ১৯৭৯ ব্যাচের কৃষি প্রকৌশলের শিক্ষার্থী ও মিশিগান স্টেটের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আবু হোসাইন জুয়েল, ১৯৮০-এর দশকের ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী ও বর্তমানে সিভিল সার্জন ড. আবু হেনা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, কৃষি প্রকৌশলের শিক্ষার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন, ১৯৮৯ ব্যাচের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর ড মোজাহার হোসেন আহম্মদ, ১৯৯৭ ব্যাচের অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থী ও জেনারেল মোটরস-এর সিনিয়র ডিজাইনার প্রকৌশলী অমিতাভ সিংহ, ১৯৯৯ ব্যাচের ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী ও কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রোটেকশন এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম, ২০০০ ব্যাচের ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী ও স্টেলান্টিস-এর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল হালিম (সোহেল), ২০০০ ব্যাচের কৃষি প্রকৌশলের শিক্ষার্থী ও স্টেলান্টিস-এর বৈদ্যুতিক গাড়ি বিভাগের ব্যবস্থাপক সাইফ সিদ্দিকী (অনন্ত), ২০০২ ব্যাচের কৃষি প্রকৌশলের শিক্ষার্থী ও অ্যামাজনে কর্মরত কাজী মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম (মারুফ)।
এই মিলনমেলার সর্বকনিষ্ঠ গ্রাজুয়েট ছিলেন কৃষি অনুষদের ২০১৩-১৪ ব্যাচের এবং ক্রপ বোটানি ডিপার্টমেন্টে (গ্র্যাজুয়েট) প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত নোশিন আরা তুনাজ্জিনা বৈশাখী।
ড. রায়হানের প্রস্তাবনায় অনুষ্ঠানে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, মিশিগানের সংক্ষিপ্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত কমিটি সভাপতি ড. কামরুল মজুমদার অধ্যাপক, কম্পিউটার সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্স। সহ-সভাপতি: ড. মোজাহার হোসেন আহম্মদ ডেপুটি ডিরেক্টর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সাইফ সিদ্দিকী (অনন্ত) ব্যবস্থাপক, স্টেলান্টিস। সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মো. আব্দুল হালিম (সোহেল) স্টেলান্টিস। কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে আছেন সিনিয়র কৃষিবিদ বেলায়েত হোসাইন এবং কৃষিবিদ আবু হোসাইন জুয়েল।
