বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে এমপি প্রার্থীসহ আহত অর্ধশতাধিক
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২১:৪৪ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ দুপক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা ও কর্মী আহতের খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবর্ষণ ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চরগড়গড়ি আলহাজ্ব মোড় এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এর আগে বুধবার ওই এলাকায় স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ ইকবাল হোসেনসহ দুইজনকে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের আহবায়ক মক্কেল মৃধার লোকজন মারধরের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে মক্কেল মৃধা নামে বিএনপির একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে মক্কেল মৃধাসহ মনিরুল ইসলাম, লালন মৃধা, আলীম হোসেন বাঁধনসহ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে আহত সবার পরিচয় জানা যায়নি।
আহতদের ঈশ্বরদী, পাবনাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জামায়াতের নেতাকর্মীরা দাবি করছেন, বৃহস্পতিবার চরগড়গড়ি আলহাজ্ব মোড়ে পাবনা-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের নেতৃত্বে নির্বাচনী প্রচারণায় যান জামায়াতের নেতাকর্মীরা। প্রচারণা চলাকালে বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের অনুসারী বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে জামায়াতের প্রার্থী আবু তালেব মন্ডলকে বহনকারী গাড়িসহ ২০-২৫টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। এসময় কয়েকটি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নেভায়।
পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর ও পাবনা-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী চরগড়গড়ির আলহাজ্ব মোড়ে গেলে সেখানে বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থক মক্কেল মৃধার নেতৃত্বে আমাদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। আমার গাড়িসহ আমাদের শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তারা।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, জামায়াতে ইসলামীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর এককভাবে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।
সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুর রহমান হামদু মেম্বার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে। জামায়াতে ইসলামীর হামলায় সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের আহবায়ক মক্কেল মৃধা, তার ছেলে মনিরুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য লালন মৃধা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আলীম হোসেন বাঁধনসহ বিএনপির ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ঈশ্বরদী ও পাবনার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পর রাতে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ঈশ্বরদী শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আ.স.ম. আব্দুন নূর বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঈশ্বরদী থানার পুলিশ, পাকশী ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যৌথভাবে ঘটনাস্থলে রয়েছি। অভিযোগ বা মামলা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রূপপুর গ্রিন সিটি মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কয়েকটি পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল দেখতে পাই।




