লণ্ডনে ‘কর্মবীর মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব সম্পন্ন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ৭:৩৭:২৯ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস: লন্ডনে ‘কর্মবীর মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর রোববার বিকাল ৫টায় পূর্ব লন্ডনের ফিল্ডগেইট স্ট্রিটস্থ আল খায়ের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ বিরোধী, খেলাফত, অসহযোগ ও আজাদী আন্দোলন এবং সিলেট গণভোটের সংগ্রামী নেতা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বক্তা মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী সিংকাপনী (রহ.)-এর জীবনীগ্রন্থ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট আলেম ও লেখক মাওলানা আব্দুল মালিক, এবং পরিচালনা করেন কে.এম. আবু তাহের চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার কাউন্সিলর সুলুক আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক বাংলা পোস্টের অনারারি চেয়ারম্যান শেখ মোঃ মফিজুর রহমান, টিভি ভাষ্যকার মুফতি আব্দুল মুন্তাকিম, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, মাজাহিরুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শায়েখ এমদাদুর রহমান আল মাদানী, ইসলামী চিন্তাবিদ অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদের সালেহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, চ্যারিটি চ্যাম্পিয়ন শায়খ সালেহ আহমদ হামিদী এবং কাউন্সিলর বদরুল চৌধুরীসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এতে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন মুফতি সৈয়দ মাহমুদ আলী। গ্রন্থটির ওপর পর্যালোচনা লিখে পেশ করেন বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খান জামাল নুরুল ইসলাম। মাওলানা সিংকাপনী জীবনের বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী অধ্যায় তুলে ধরেন সাংবাদিক ও কবি আজিজুল আম্বিয়া। সিংকাপনী পরিবারের ওপর ড. মোহাম্মদ আবুল লেইসের লেখা বক্তব্য পাঠ করেন রিদওয়ান আব্দুর রহমান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী শুধু রাজনীতিতেই নয়, ইসলাম প্রচার ও প্রসার, শিক্ষা, সাংবাদিকতা, সাহিত্যচর্চা, কৃষি উন্নয়ন এবং উপমহাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে গভীর ভূমিকা রেখে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর অবদান নিয়ে ইতিহাসবিদ সৈয়দ জয়নাল আবেদীন এবং পরবর্তীতে কে.এম. আবুতাহের চৌধুরী ও মুফতি দেওয়ান আব্দুর রাজা চৌধুরী যে বিস্তৃত জীবনী রচনা করেছেন, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মূল্যবান ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে।
বক্তারা আরও বলেন, মাওলানা সিংকাপনী ব্রাদার্স—মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী সিংকাপনী, মাওলানা আব্দুল খালিক সিংকাপনী, হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদের সিংকাপনী এবং মাওলানা আব্দুল আজিজ সিংকাপনী—উপমহাদেশের ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি ও মুসলমানদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁদের প্রচেষ্টায়ই সিলেট গণভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়, যার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পথ পায়।
বক্তারা আরো স্মরণ করিয়ে দেন, সিলেট বিভাগ থেকে মুসলমান সম্পাদিত প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘আল-জালাল’ ১৯২৫ সালে সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত হয়, যেখানে সিংকাপনী পরিবারের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। ১৯৪৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন সিলেট সফরকালে মাওলানা সিংকাপনী তাঁর ২২ দফা দাবি পেশ করেন, যা আজ ইতিহাসে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে স্বীকৃত।
অনুষ্ঠানের শেষে মাওলানা সিংকাপনী ভ্রাতৃদ্বয়ের জন্য কুরআন তিলাওয়াত করে দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি আব্দুল মুন্তাকিম এবং দোয়া শেষে শিরনি বিতরণ করা হয়।



