ইরানের তৈরি সিমোর্গ কার্গো বিমানের যে বিশেষত্ব দেখে বিশ্ব অবাক
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ৯:২৪:২১ অপরাহ্ন
অনুপম প্রতিবেদক: ইরান আবারও প্রমাণ করল—নিষেধাজ্ঞা ও প্রযুক্তিগত বাধা সত্ত্বেও তারা নিজস্ব শক্তিতে নতুন দিগন্ত ছুঁতে পারে। দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে তৈরি নতুন কার্গো বিমান ‘সিমোর্গ’ (Simorgh), যা দেখে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বিশ্বজুড়েই বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।
সিমোর্গ হলো একটি হালকা পরিবহন বা কার্গো বিমান, যার নকশা ও নির্মাণ সম্পূর্ণরূপে ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে করা হয়েছে। এই বিমানের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো—এটি ছোট রানওয়েতেও উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে। ফলে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বা সামরিক ঘাঁটির মতো সীমিত পরিসরের জায়গায়ও এটি ব্যবহারযোগ্য।
বিমানটি দুইটি শক্তিশালী টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন দ্বারা চালিত, প্রতিটি ইঞ্জিনের ক্ষমতা প্রায় ২,৫০০ হর্সপাওয়ার। সর্বোচ্চ টেকঅফ ওজন প্রায় ২১.৫ টন, আর কার্গো বহনক্ষমতা ৬ টন পর্যন্ত। একবার জ্বালানি ভরে এটি প্রায় ৩,৯০০ কিলোমিটার উড়তে পারে। এতে রয়েছে একটি রিয়ার লোডিং র্যাম্প, যার মাধ্যমে গাড়ি, সামরিক সরঞ্জাম, বড় কার্গো কিংবা মানবিক সহায়তার পণ্য সহজে ওঠানামা করা যায়।
আরও পড়ুন—
♦ যৌন কেলেঙ্কারি: যুক্তরাজ্যের রাজার ভাই অ্যান্ড্রু ‘প্রিন্স’ উপাধি হারাচ্ছেন
♦ ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিমানের নকশায় অনেকাংশে মার্কিন সি-১৩০ হারকিউলিস বিমানের আদল পাওয়া গেলেও প্রযুক্তি ও উপকরণের দিক থেকে এটি সম্পূর্ণ ইরানি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—বিমানটি সম্পূর্ণ দেশীয় কারখানায় উৎপাদিত, যেখানে পশ্চিমা দেশগুলোর কোনো অংশ বা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়নি।
ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিমোর্গ শুধু সামরিক কাজে নয়, ভবিষ্যতে বেসামরিক কার্গো ও মেডিকেল ইভ্যাকুয়েশন সেবায়ও ব্যবহৃত হতে পারে। এটি এখন পর্যন্ত বিভিন্ন পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এবং খুব শিগগিরই ইরানের বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হবে।
বিশ্ব অবাক হয়েছে মূলত তিনটি কারণে
১. ইরান এমন এক সময় নিজস্বভাবে বিমান নির্মাণে সফল হলো, যখন দেশটি কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে।
২. বড় আকারের কার্গো বিমান তৈরির সক্ষমতা বর্তমানে বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশেরই আছে।
৩. স্বল্প বাজেটে এত উচ্চক্ষমতার একটি বিমান নির্মাণ প্রযুক্তিগত কৃতিত্ব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, “সিমোর্গ শুধু একটি বিমান নয়, এটি ইরানের প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতার প্রতীক।”
এই উদ্ভাবন প্রমাণ করেছে—যে দেশ নিষেধাজ্ঞার দেয়াল ভেদ করে নিজস্ব মেধা ও পরিকল্পনায় এগোতে জানে, তাকে থামিয়ে রাখা যায় না।




