লন্ডনে গেলেন ট্রেসি জ্যাকবসন, ফের তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ২:২০:৪৫ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের টানাপোড়েনের মধ্যে আবারও লন্ডন সফরে গেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।
বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি স্বামী ডেভিড বাফকে নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করেন।
তিন মাসের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় লন্ডন সফর।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এই সফরে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন। আলোচনায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিরোধী দলের নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা ও নির্বাচনী রোডম্যাপের মতো ইস্যু থাকতে পারে। যদিও এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত জুলাইয়েও লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ট্রেসি। সে সময় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির পরিকল্পনা ও সরকারের প্রতি তাদের অবস্থান নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান দলের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রেসির এবারের সফর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসির’ অংশ। আনুষ্ঠানিক নয়, তবে এ ধরনের আলোচনার মাধ্যমে ওয়াশিংটন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে বার্তা দিতে চাইছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকদল ঢাকায় এসেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ও চাপ বাড়ার এ সময়ে ট্রেসির লন্ডন সফর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।ে
আরও পড়ুন—
যুক্তরাজ্যের সভাপতি এমএ মালিককে সতর্ক করল বিএনপি
যুক্তরাষ্ট্রের ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসি কী: অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা আদান-প্রদান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আগাগোড়াই। যদিও ট্রেসির এবারের সফরে সঙ্গে তার স্বামী থাকায় সফরটি ব্যক্তিগত বলে দাবি করা হলেও এটি মানছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসি, যা অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা আদান-প্রদানের একটি কৌশল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সময়ে এটি প্রয়োগ করেছে দেশটি, বিশেষ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং নির্বাচনী সংস্কারের লক্ষ্যে।
এ নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারি নয় এমন ব্যক্তি, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বা অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে বিরোধী দল এবং সরকারের মধ্যে সংলাপ সহজতর করে, যাতে অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এবং মানবাধিকার নিশ্চিত হয়। বাংলাদেশে এর উদাহরণ গত জুলাইয়েও দেখা যায়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। যা অনানুষ্ঠানিক সৌজন্য বৈঠক হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার তথ্য প্রকাশিত হয় না; কিন্তু এর মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন এবং বিরোধী দলের অবস্থান নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।
যা আপাতদৃষ্টিতে ব্যক্তিগত বলে দাবি করা হলেও রাষ্ট্রদূতের পদমর্যাদা এবং এর রাজনৈতিক তাৎপর্য এটিকে ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসির আওতায় নিয়ে আসে। দক্ষিণ এশিয়ায় ট্র্যাক টু ডিপ্লোমেসির ব্যাপক ব্যবহার—যেমন ভারত-পাকিস্তান সংলাপে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছিল।




