তোফায়েল আহমেদের অবস্থা সংকটাপন্ন, স্কয়ারে সিসিইউতে ভর্তি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৫:১১ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: ষাটের দশকের ছাত্ররাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসৈনিক, আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বার্ধ্যক্যজনিত নানা জটিলতা নিয়ে তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক জানিয়েছেন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “তোফায়েল আহমেদ আমাদের হাসপাতালে চার দিন ধরে ভর্তি আছেন। তিনি বার্ধ্যক্যজনিত কারণে অসুস্থ। তার অবস্থা ভালো নয়। তিনি এই মুহূর্তে আমাদের সিসিইউতে ভর্তি আছেন।”
তার মৃত্যুর যে গুঞ্জন রয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইউসুফ বলেন, “এমন কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এ ধরনের তথ্য সঠিক নয়।”
৮২ বছর বয়সী তোফায়েল আহমেদের হাসপাতালে ভর্তি থাকার কথা জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল খায়েরও। তিনি বলেন, “উনার শরীরটা বেশি ভালো না। উনি হাসপাতালে ভর্তি। উনার জন্য দোয়া করবেন।”
পরিবারের এক সদস্য বলেন, কয়েক বছর ধরেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন তোফায়েল আহমেদ। স্ট্রোকের কারণে তার শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। বাঁ হাত ও পা অবশ হয়ে পড়ায় তিনি চলাফেরা অক্ষম হয়ে পড়েন।
১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে তোফায়েল আহমেদের জন্ম। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন।
১৯৬৮-৬৯ এর উত্তাল সময়ে তোফায়েল ছিলেন ডাকসুর ভিপি। সে হিসেবে তিনি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তিনি ছিলেন ছাত্রসমাজের নেতৃত্বের ভূমিকায়।
প্রবল গণ আন্দোলনে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সকল আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ওই বছর ২৩শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভার আয়োজন করে। লাখো জনতার সেই সমাবেশে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। আর সেই উপাধি ঘোষণা করেন তোফায়েল আহমেদ।

আরও পড়ুন—
লেবার সম্মেলনের কাছে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ সমর্থনে বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার
১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ(বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত) এর মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন তোফায়েল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন মুজিব বাহিনীর অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন।
স্বাধীন বাংলাদেশে ৯ বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। সর্বশেষ তিনি ভোলা-১ আসনের এমপি ছিলেন।
দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে পরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন তোফায়েল আহমেদ। বর্তমানে তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় তাঁকে রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব দেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা তার সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন তোফায়েলকে। পরে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আবারও তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।




