যেসব তথ্য দিলে এআই চ্যাটবটকে বিপদে পড়তে পারেন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২:২০:১৪ অপরাহ্ন
অনুপম প্রযুক্তি ডেস্ক: বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা কিংবা একাকিত্বে আলাপচারিতা, কোনো বার্তা বা ইমেইলের খসড়া করা ইত্যাদি নানা কাজে মানুষ এখন চ্যাটজিপিটি বা অনুরূপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবটের সাহায্য নিয়ে থাকেন। মানুষেরই মতো উত্তর দেওয়ার ক্ষমতার কারণে চ্যাটবট জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে দ্রুত।
কিন্তু প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—চ্যাটবট ব্যবহারে অসাবধানতা নানা ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে।
কোনো এআই চ্যাটবটের সঙ্গে ব্যবহারকারীর আলাপ কখনোই পুরোপুরি গোপন নয়। ব্যবহারকারী যা বলছেন বা করতে নির্দেশ দিচ্ছেন, তা সংরক্ষণ বা বিশ্লেষণ করা হতে পারে, এমনকি ভবিষ্যতে ফাঁসও হয়ে যেতে পারে। তাই কিছু তথ্য কখনোই এআই চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়।
ব্যক্তিগত তথ্য
আপনার পুরো নাম, বাসার ঠিকানা, ফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল—আলাদাভাবে নিরীহ মনে হলেও একত্র করলে এগুলো দিয়ে সহজেই অনলাইন পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব। এই তথ্য ফাঁস হলে প্রতারণা, ফিশিং আক্রমণ বা এমনকি শারীরিক ট্র্যাকিংয়ের ঝুঁকিও বাড়ে।
আর্থিক তথ্য
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরের মতো তথ্য সাইবার অপরাধীদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। চ্যাটবটে শেয়ার করলে তা অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।
পাসওয়ার্ড
কোনো অবস্থাতেই চ্যাটবটে পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না। এতে ই-মেইল, ব্যাংক বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। নিরাপদ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করাই উত্তম।
গোপন কথা বা স্বীকারোক্তি
অনেকেই একাকিত্বে চ্যাটবটকে মনের কথা বলেন। কিন্তু এআই কোনো বন্ধু বা চিকিৎসক নয়। আপনার শেয়ার করা তথ্য সংরক্ষণ হয়ে ভবিষ্যতে ব্যবহৃত বা ফাঁস হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন—
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ: এআইয়ের যুগে ওআইয়ের দাপট
স্বাস্থ্য বা চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য
চিকিৎসা বিষয়ক তথ্য চ্যাটবটের কাছে জানতে চাওয়া নিরাপদ নয়। প্রেসক্রিপশন, চিকিৎসার ইতিহাস বা বিমা–সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করলে তা চুরি হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য সমস্যায় সর্বদা যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অশ্লীল বা আপত্তিকর বিষয়বস্তু
যৌন বা অবমাননাকর আলাপ, বেআইনি তথ্য বা আপত্তিকর কনটেন্ট চ্যাটবটে শেয়ার করলে তা রেকর্ড হয়ে ভবিষ্যতে সমস্যায় ফেলতে পারে।
কর্মস্থলের গোপনীয় তথ্য
ব্যবসায়িক কৌশল, নথিপত্র বা পরিকল্পনা চ্যাটবটে পেস্ট করলে তা বাইরে ফাঁস হয়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
আইনি জটিলতা বা মামলা
চুক্তি, মামলা বা আইনি বিবাদসংক্রান্ত পরামর্শের জন্য কখনো চ্যাটবটের ওপর নির্ভর করা ঠিক নয়। ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য ভবিষ্যতে আইনি বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সংবেদনশীল ছবি বা নথি
পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ছবি কখনোই চ্যাটবটে আপলোড করা উচিত নয়। এগুলো চুরি হয়ে পরিচয় জালিয়াতির মতো বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
যা আপনি অনলাইনে দেখতে চান না
যে কোনো তথ্য, ছবি বা লেখা যদি আপনি চান না ভবিষ্যতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ুক, তাহলে সেটি চ্যাটবটে শেয়ার করবেন না। সুতরাং এআই চ্যাটবটের সঙ্গে আলাপ যতই স্বাভাবিক মনে হোক, ব্যবহারকালে সতর্ক থাকা জরুরি।




