বিএনপি নেত্রী নিলুফার ক্ষমা না চাইলে ব্যবস্থা নেবে শিবির
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:২০:৫২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনির বক্তব্যকে মিথ্যাচার আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
সংগঠনটি জানিয়েছে, তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় এমনটি জানানো হয়।
বিবৃতিতে জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সহসম্পাদক ও সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল আয়োজিত টকশোতে অংশ নিয়ে দাবি করেন, “বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে শিবির হত্যা করেছে।” যে বক্তব্য গণমাধ্যম সূত্রে আমাদের নজরে এসেছে। ছাত্রলীগ কর্তৃক বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, তা শুধু মিথ্যাচারই নয়, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইকে অশ্রদ্ধা ও প্রশ্নবিদ্ধ করার শামিল। রাজনৈতিক ও আদর্শিক প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হয়ে ছাত্রশিবিরের বিরোধিতা করতে গিয়ে তিনি মিথ্যাচারের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। আমরা তার এই নির্জলা মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অপরাধে তাঁকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে তারা, যা আদালতের রায় দ্বারা প্রমাণিত।’
যৌথ বার্তায় জানানো হয়, ‘দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনকালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে হেন কোনো অপরাধ নেই যা করেনি। খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, শিক্ষার্থী নির্যাতন, বিরোধী মত দমন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি ছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহের নৈমিত্তিক কর্মকাণ্ড। ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ নির্যাতনের শিকার বিএনপি, জামায়াত এবং আওয়ামীবিরোধী সব দল ও মতের সংগ্রাম ছিল তাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেই।’
জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘শিবির সন্দেহে সনাতন ধর্মাবলম্বী বিশ্বজিৎসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা ও নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ, যার প্রমাণ গণমাধ্যম ও জাতির সামনে স্পষ্ট। অথচ বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনি ছাত্রশিবিরের বিরোধিতা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের সীমাহীন অপরাধকে দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যা জনমনে প্রশ্ন তৈরি করছে—তিনি আসলে পতিত ফ্যাসিস্টদের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন কি না। শুধু তাই নয়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক ইমেজ বিনষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে তিনিসহ একটি বিশেষ চক্র এমন মিথ্যাচার পথ বেছে নিয়েছে।’
জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দেন, ‘আমরা তার এই বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে এই অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’




