একগুচ্ছ কবিতা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৩৮:৪১ অপরাহ্ন
শাহ শামীম আহমেদ

১। আত্মপরিচয়
বোধের সমুদ্রে ভাসি- বোধিভ্রমে ভেসে ভেসে যাই
প্রবল তৃষ্ণায় মরি, সত্য শুধু অন্তলীন পিপাসা গভীর
এই সত্য জেনে গেছি তাই …
ধ্যানের জগত থেকে শূন্যে উড়ে যাই
সৌরচুল্লিতে এ হৃদয় পুড়ে পুড়ে ছাই
এই কবি সভা
বহুধা বিশেষণে পরিচয়, এতো কিছু নাই ।
যাই-
শূন্য থেকে শূন্যে ভেসে যাই
চাঁদের শরীর থেকে পান করি জ্যোৎস্নার মদ
কল্পলোক থেকে তুলে আনি মুঠো মুঠো স্বপ্নের কণা
আমি তো কেউ না- হাতে কিছু নাই
তবুও অর্ঘ্য এই
শব্দে শব্দে ভাঙাগড়া- কল্পনায় হয়ে উঠে রাঙা
শব্দের নদীতে আমি এক মুগ্ধ মাছরাঙা ।
২। রাতের এক্সরে রিপোর্ট
অবিরল ক্লান্তিতে নতজানু মুখ করে হেঁটে যায় সন্ধ্যার নারী আমাদের প্রৌঢ় শহরে নেচে নেচে নেমে যায় কালো রাত যান্ত্রিক সভ্যতার শরীরজুড়ে বেড়ে ওঠে পাষাণ প্রাসাদ শুরু হয় সংঘর্ষ আলো-অন্ধকার।
শূন্যতায় ভর করে বেঁচে- থাকা পৃথিবীতে রাতের জরায়ূ জুড়ে আঁকুপাকু নেচে ওঠে বেশ্যা শহর অশ্লীল বাক্যালাপে টলতে টলতে মাতালের ঘরফেরা রাত কীনব্রীজের নিচে।
গণিকার গোপন সংসারে পুলিশের বেশরম হানা বন্য শুয়োরের মতো নর্দমায় নেয়ে ওঠে আইনি পোষাক দীপ্যমান মুদ্রা পেয়ে অভয়ের বাণী দেয়
অয়োময় নেচে ওঠে হাত
হাওয়ায় বসন উড়ে গৈরিক আঁধারে
ভ্রƒণ নয়Ñ বীর্যবিষ ঢেলে স্বর্গময় হাবিয়া দোজখে শহরের নিখাদ শরীরে জেগে ওঠে যৌবনা রাত
কুমারী- যোনীতে সঙ্গম করে নপুংসক পুরুষেরা রমণীরা শুয়ে আছে নিখাদ শররি খুলে…
নগ্নরাত! রাতের নিমগ্ন শরীর দেখে না দৃষ্টিমান মানুষেরা বুর্জোয়া ঘুম এসে ডেকে নেয় স্বপ্নবিলাসে।
৩। সিলট শহর যেন শামীমের কবিতার খাতা
শিশিরে শিক্ত হলে মেঠু-পথ
রাত ঘন হযে আসে তরল কালির মতো
অন্ধকার
গলে..
গলে..
মিশে যায় ঘাসে
ছেলেতো ফিরেনা তার-
শহর খেয়েছে মাতা
সিলেট শহর যেন-
শামীমের কবিতার খাতা
৪। জালালী কৈতর সব
জালালী কৈতর সব ছেড়ে গেছে কীনব্রীজ…
সুরমার মিঠাজল,
ময়ূরপুচ্ছ পরে নৃত্যরত, শহরের বুক জুড়ে
ঝাক-ঝাক বহুবর্ণিল কর্কশ কাক
কলস থেকে জল খাওয়ার কৌশলে টুকরে খাচ্ছে সভ্যতার শরীর,
ইলেকট্রিক তারে ঝুলছে বাদুড়স্বভাবা মানুষ,
ক্ষুধার দোযখে জ্বলে দ্বিপ্রহর বেলে,
এমন আলোতে জ্বলে এক অন্ধকার রমণী,
উনুনে ইন্ধন করে কাঠকয়লা কালো টায়ার
তার ক্ষুধার আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে শোভন শহর
বিষবাষ্প জল নেমে অসহ্য যন্ত্রণায় পুড়ে যাচ্ছে সভ্যতার কংক্রীট হৃদয়।
৫। তৃষ্ণাগুলো করেছি সষ্ণয়
কয়লা খনির ভেতর অন্ধকারে পড়ে আছে কালো আত্মা
কতকাল এ্ শ্রমিক মন ঘষে ঘষে জ্বালিয়েছি
অজ্ঞতার গহীন অন্ধকার তেকে আলোর টানেল ধরে করেছি হীরের সন্ধান
অথচ বাইরে জ্বলছে ঐ নক্ষত্রের ফুল
রোদের অক্ষওে সতীর্থ সময় লিখে নিজস্ব ঠিকানা
ঝিনুকের যন্ত্রনাটুকু কতবার পুষেছি যে বুকের গভীরে
সকল রহস্যথিম পড়ে আছে স্তুপিকৃত বোধের দুয়ারে
ভিখেরীর সমস্ত সঞ্চয়ের মতো এই অকিঞ্চিত সৃষ্টিটুকু
দু:খের মতো আমারই নিজস্ব
আনন্দের শুভ্রভ্রুণ স্বপ্ন-রেণু গড়েছি শিল্পের শহরে
পূর্ণগ্রাস তরল আনন্দ আর বৃষ্টিভেজা রমণীর গা
ঠোঁটে ঠোঁট রাখা চুম্বনের অমৃত স্বাদ যাÑ কিছু মাতাল কওে,যা কিছু অদেখা. . .
বোধের করতলগত এই তৃষ্ণাগুলো করেছি সষ্ণয়।




