পর্তুগাল: ২২ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে যে কারণে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৫:১৯:৪৩ অপরাহ্ন
প্রবাস ডেস্ক: পর্তুগালে ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দেওয়ার অভিযোগে ২২ জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইএমটি (Instituto da Mobilidade e dos Transportes)।
সংস্থাটির পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে, অভিযুক্তরা বাংলাদেশের জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিয়ে পর্তুগিজ ড্রাইভিং লাইসেন্স এক্সচেঞ্জের চেষ্টা করেছিলেন।
অথচ বাংলাদেশ ও পর্তুগালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিলে কোনো লিখিত বা প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা ছাড়াই সহজে পর্তুগিজ লাইসেন্স পাওয়া যায়। এই সুযোগ কাজে লাগাতে অভিযুক্তরা জালিয়াতির পথ বেছে নেন।
পর্তুগালে অনেক বাংলাদেশি ফুড ডেলিভারি, ট্যাক্সি সার্ভিস ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সের ওপর নির্ভরশীল। ফলে বৈধ কাগজপত্রের পরিবর্তে জাল নথি ব্যবহারের এই ঘটনাকে গুরুতর অনিয়ম হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইএমটি জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত সবার ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর অভিন্ন, যা জালিয়াতির স্পষ্ট প্রমাণ। বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, ইএমটি অভিযুক্ত ২২ জনের নামের তালিকা পাঠিয়েছে এবং এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি তালিকাভুক্তদের জরুরি ভিত্তিতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই ২২ জন হলেন— ১. তোফাজ্জল মিয়া, ২. মো. জায়েদ সর্দার, ৩. মো. আব্দুল কাদের, ৪. সৈয়দ আবিদুর রহমান, ৫. মোহাম্মদ সুমন, ৬. শেখ বদরুল আহমেদ নাদিম, ৭. আরিফ ভূঁইয়া, ৮. আশিকুর রহমান, ৯. মো. আবেদ রেজা, ১০. মো. মনসুর আহমেদ, ১১. মো. মাহবুবুর রহমান, ১২. সাইফুল আহমেদ, ১৩. জামাল হোসেন, ১৪. তাহমির আহমেদ রাজু, ১৫. তারেক রহমান, ১৬. মো. বায়েজিদ ভূঁইয়া, ১৭. জাবের আলী, ১৮. আব্দুল ওয়াহিদ, ১৯. মো. আসাদুজ্জামান, ২০. মো. ফরহাদ উদ্দিন মজুমদার, ২১. ফয়সাল আহমেদ, ২২. রুমোন আকতার।
এই ঘটনাকে ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, অভিযুক্তদের পাশাপাশি পুরো কমিউনিটির ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে নতুন লাইসেন্স সংগ্রহ ও নবায়ন প্রক্রিয়া আরও কঠোর হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। লিসবনের বাংলাদেশি কমিউনিটির কয়েকজন নেতা বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুনাম রক্ষা করতে হলে অবশ্যই নিয়ম মেনে সঠিক প্রক্রিয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
ইএমটির নিয়ম অনুযায়ী, পর্তুগালে বৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ড্রাইভিং লাইসেন্স এক্সচেঞ্জ করতে হলে বৈধ বাংলাদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সের মূল কপি, দূতাবাস থেকে সত্যায়িত কপি, রেসিডেন্স পারমিট, ট্যাক্স নম্বর এবং মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। এসব ডকুমেন্ট যাচাইয়ের পরেই পর্তুগিজ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে ইএমটি।


