বালাগঞ্জ: জিল্লুল হক কর্মগুণে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন—তাহসিনা রুশদীর লুনা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫১:১২ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা: বালাগঞ্জের পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও সালিশ ব্যক্তিত্ব মরহুম জিল্লুল হকের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের নানা স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে ‘শূন্যতায় শোকাশ্রু’ স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ৩টায় গোয়ালাবাজার সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নিখোঁজ জননেতা এম. ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা স্মারক গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
আলোচক, সহকর্মী ও স্বজনরা আবেগঘন স্মৃতিচারণে উল্লেখ করেন প্রয়াত জিল্লুল হক চেয়ারম্যান মানুষের হৃদয়ে কতটা প্রিয় ও জীবন্ত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, “জিল্লুল হক একজন আদর্শবান জনপ্রতিনিধি ছিলেন। সমাজের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে কর্মগুণে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। একটি বই সাজানো সহজ কাজ নয়, যথেষ্ট মেধা ও প্রতিভার প্রয়োজন। মরহুম জিল্লুল হকের সন্তান মাহবুব আহমদ রুমন এই স্মারক গ্রন্থটি সম্পাদনা করে সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। বর্তমান প্রজন্মকে লেখালেখি ও পড়াশোনায় আগ্রহী হতে হবে। আমি আশা করি রুমনকে দেখে অনেকেই সাহিত্যচর্চায় এগিয়ে আসতে উৎসাহিত হবে। মরহুম জিল্লুল হক তাঁর রেখে যাওয়া মহৎ কাজের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বেঁচে থাকবেন।”
অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে মরহুম জিল্লুল হকের সততা, সাহসিকতা, মানবিকতা ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বগুণের প্রসঙ্গ।
গোয়ালাবাজার সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মুকিত আজাদের সভাপতিত্বে, ওসমানীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রকিব আলী এবং কবি বোরহান উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা হাফিজ সৈয়দ মো. আবু তাহের।
আলোচক হিসেবে তাজপুর ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খসরুজ্জামান বলেন, “মরহুম জিল্লুল হক সম্পর্কে আমি যতই জেনেছি, ততই মুগ্ধ হয়েছি। তাঁর মতো নিঃস্বার্থ পরোপকারী মানুষ সমাজে এখন বিরল। জীবনের বড় সফলতা হলো মাহবুব আহমদ রুমনের মতো যোগ্য উত্তরসূরি রেখে যাওয়া। রুমন আমার প্রিয় ছাত্র। তিনি পিতার কর্মময় জীবনকে অমর করতে এই স্মারক গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন, এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মিছবাহ বলেন, জিল্লুল হক চেয়ারম্যান ছিলেন একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্ব। সমাজসেবক ও সালিশ ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ এবং ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হিসেবে নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছেন।
অবিভক্ত বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল জিলু বলেন, “শূন্যতায় শোকাশ্রু নামকরণটি অসাধারণ হয়েছে। ভাতিজা মাহবুব আহমদ রুমনকে ধন্যবাদ জানাই তাঁর প্রয়াত পিতার স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য। জিল্লুল হক ছিলেন জননেতা ইলিয়াস আলীর ঘনিষ্ঠ সহচর। আমি নিজ চোখে দেখেছি ইলিয়াস আলী তাঁকে কতটা মূল্যায়ন করতেন।”
স্মারক গ্রন্থের সম্পাদক ও জিল্লুল হক স্মৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাহবুব আহমদ রুমন বলেন, “এখনকার জনপ্রতিনিধিদের সম্পদ বাড়ে, কিন্তু আমার বাবা জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। তিনি একজন গরিব চেয়ারম্যান ছিলেন—এটাই আমার গর্ব। ইতালির বিলাসী জীবন ফেলে এসে মানুষের জন্য কাজ করে তিনি ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। সেই ভালোবাসাই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ময়নুল হক, সিলেট জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাহসিন শারমীন তামান্না, ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শাহ মো. এহিয়া, গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক, ওসমানীনগর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজল আহমদ জনি, সিলেট জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক রেদওয়ান আহমদ, সিলেট জেলা যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ মো. মনসুর, ওসমানীনগর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাজু আহমদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জিল্লুল হক স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।



