ক্ষমা-অনুশোচনার প্রশ্নে এখনো আওয়ামী লীগের ‘না’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২:৩৯:১২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কয়েকজন আছেন কারাগারে। দেশের ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবর এসেছে প্রমাণসহ যে, ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলন দমাতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা। জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকেও হত্যাকাণ্ডের কথা জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল জানিয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে যুক্ত করে চরম বল প্রয়োগেই নয়, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার মারণাস্ত্র দিয়ে গুলি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, এমন কি চিকিৎসা পেতে পর্যন্ত বাধা দিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
সরকার পতনের ৯ মাস পার হলেও এর দায়ে ক্ষমা প্রার্থনা বা অনুশোচনা করেনি আওয়ামী লীগ। আন্দোলনে দমননীতি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমা চায় বা অনুশোচনা করে, তাহলে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারে, এমন একটা আলোচনা রয়েছে রাজনীতিতে। অন্তর্বর্তী সরকারেরও কেউ কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।
তবে ক্ষমা চাওয়ার কোনো চিন্তা দলটিতে এখনো নেই।
তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা আছে, এমন ইঙ্গিতও পাওয়া যায় না। বরং তারা এখনো ‘ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ নিয়েই আছেন। ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক মাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনা আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এখন বিদেশে অবস্থান করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পতনের আগে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। কিন্তু অনুশোচনার প্রশ্নে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে। এ জন্য অন্য কোনো পক্ষের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার বিষয় নেই।’
বিদেশে অবস্থান করা দলটির আরেকজন নেতা জানান, পরিস্থিতি সামলাতে তাদের কিছু ভুল ছিল, এমন আলোচনাও তাদের মধ্যে আছে। দলগতভাবে অবশ্য তারা এখনো কিছু বলেননি।
তিনি উল্লেখ করেন, তাদের দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ এখনো হয়নি। তারা এখন পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে চাইছেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তুলে ধরার বিষয় নিয়েও তারা আলোচনা করছেন।
তবে শুরু থেকেই ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনার বিষয়টি দলীয় সংস্কৃতিতে নেই বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশে ভুলের জন্য দলীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনা করার সংস্কৃতি নেই। এর আগে কোনো দল তা করেনি।
আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগও সে পথে হাঁটবে না। দলটি তাদের ন্যারেটিভ এবং অবস্থান নিয়েই রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’
সূত্র : বিবিসি বাংলা




