বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় গ্রেপ্তারে লাগবে ‘ঊর্ধ্বতনের অনুমতি’: ডিএমপি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ৩:৫৮:৩২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় এখন থেকে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হলে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে এবং প্রমাণসহ গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে হবে—এমন নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, “এসকল মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা অতিরিক্ত। ফলে গ্রেপ্তারের আগে যথাযথ প্রমাণাদি যেমন: ভিকটিম বা প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, ভিডিও/অডিও ক্লিপ, স্থিরচিত্র, মোবাইল কললিস্ট বা সিডিআর ইত্যাদি সংগ্রহ করে অনুমোদন নিতে হবে।”
ফারুক হোসেন বলেন, “আমরা সবসময় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চাই। যেন নিরপরাধ কেউ হয়রানির শিকার না হয় এবং প্রকৃত অপরাধী যেন আইনের হাত থেকে ছাড় না পায়।”
পুলিশের নিয়ম অনুযায়ী সাধারণত তদন্তকারী কর্মকর্তারই গ্রেপ্তার ও প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষমতা থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ের ঢালাও মামলা ও নির্বিচারে আসামি করার প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার পর, কেন্দ্রীয়ভাবে এই নির্দেশনা দেওয়া হলো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূত্র ধরে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সারা দেশে একের পর এক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অনেক মামলায় প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকা ব্যক্তিরাও তালিকায় রয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, কিছু মামলায় স্থানীয় প্রতিপক্ষ, এমনকি আগের সরকার দলের নেতারাও আসামি হয়েছেন। কোথাও কোথাও মামলায় আসামি করতে এবং পরে গ্রেপ্তার ঠেকাতে অর্থনৈতিক লেনদেন বা “বাণিজ্য” হওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এই ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগেও সরকার থেকে বারবার বলা হয়েছে, শুধু এফআইআরে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার করা যাবে না। গত ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও একই রকম নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।
এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, “মামলা মানেই গ্রেপ্তার নয়।” ৫ অক্টোবর উত্তরায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “প্রথমে তদন্ত, পরে প্রমাণ মিললে আইনগত ব্যবস্থা—এটাই হবে মূলনীতি।”
ডিএমপির সর্বশেষ নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন, তদন্তে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাদের নাম মামলা থেকে প্রত্যাহার করার পদক্ষেপ নিতে হবে।