সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান?
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ২:৪৫:২৩ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পরস্পর হুমকি-ধামকির পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সামরিক পদক্ষেপ ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে আবারো দেখা দিয়েছে সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কা।
তেহরানের দোড়গোড়ায় মার্কিন বোমারু বিমান মোতায়েনে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। আবার সেই বিমান লক্ষ্য করে ইরানের হামলার শঙ্কা যেন ঘি ঢেলেছে আগুনে। এরইমাঝে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় রণতরী পাঠানোর ঘোষণা আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে পরিস্থিতি।
পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের বিবাদ বহু পুরোনো। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় সে উত্তেজনা। তেহরানকে চুক্তির আওতায় না আনতে পারলে বোমা হামলার হুমকিও দেয় ওয়াশিংটন।
শুধু হুমকি-ধামকি দিয়েই থেমে থাকেনি ট্রাম্প প্রশাসন। আগাম সতর্কতা হিসেবে ভারত মহাসাগরে চাগোস দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়ায় বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়েছে ৬টি স্টেলথ বি-টু মডেলের বিমান, ভারী বোমার পাশাপাশি যেগুলো পারমাণবিক বোমা বহনেও সক্ষম।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন উসকানির বিপরীতেও পরমাণু ইস্যুতে নিজ অবস্থানে অনড় ইরান। জানিয়েছে হামলা হলে জবাব দেবে তেহরানও।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন বলছে, ওয়াশিংটন হামলা চালানোর আগেই দিয়েগো গার্সিয়া ঘাঁটিতে সামরিক কমান্ডারদের হামলার আহ্বান জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। দ্বীপটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্রও প্রস্তুত রেখেছে তেহরান।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান প্রজেক্ট ডিরেক্টর আলি ভায়েজ বললেন, খুবই স্পর্শকাতর পরিস্থিতি। ইরান এনপিটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আর তা সত্যি হয়ে গেলে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর কোনো আন্তর্জাতিক তদারকি থাকবে না। যেটা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কাছে সহ্য হবে না। ফলস্বরুপ, সামরিক পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।
চলমান উত্তেজনার মাঝেই মধ্যপ্রাচ্যে আরও একটি বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর হুঙ্কার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় রনতরী বহরে যুক্ত হলে লোহিত সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে দুইটিতে। বাড়ানো হচ্ছে সামরিক বিমানের উপস্থিতিও। যা দিয়ে ইরানের পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করা হতে পারে ইয়েমেনেও। তবুও ওয়াশিংটনের সাথে সরাসরি সংলাপে যেতে নারাজ তেহরান।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক অ্যালেক্স ভাতানকা বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য স্পষ্ট। সে চায় না ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র বলতে কিছু থাকুক। কিন্তু তেহরান সরাসরি সংলাপে যাবে না। কেননা, খামেনি প্রশাসন ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে যাওয়াটাকে পরাজয় হিসেবে দেখে। খামেনি নিজে চুক্তি চাইলেও অপমানের ভয়ে সামনাসামনি তা করবে না।
এদিকে, ইরানে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের আকাশসীমা কিংবা ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না সৌদি আরবসহ পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো। নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমিরাত, কাতার, কুয়েতের মতো দেশগুলো। মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বিষয়টি জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।