ধস মার্কিন শেয়ারবাজারে, ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের দরপতন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মার্চ ২০২৫, ৩:০৯:২৩ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় ধস নেমেছে শেয়ারবাজারে। শেয়ারহোল্ডাররা বিক্রি করতে শুরু করেছেন তাদের শেয়ার। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০ কোম্পানির সূচক এসএন্ডপি-৫০০ এর সূচকে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের দরপতন হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিটেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে একের পর এক ধাক্কায় অনিশ্চয়তায় ডুবে যাচ্ছে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া ভোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও হতাশা বেড়েছে। বিশেষ করে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের মতো প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে অনিশ্চয়তা ও হতাশা গ্রাস করেছে বিনিয়োগকারীদের। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলথ এনহ্যান্সমেন্টের সিনিয়র বিনিয়োগ কৌশলবিদ আয়াকো ইয়োশিওকা বলেন, আমরা স্পষ্টতই একটি বড় ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। আগে যেভাবে কাজ করেছে এখন তাও করছে না।
ইতিমধ্যেই নিজেদের শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেছেন শেয়াহোল্ডাররা। সোমবার এর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচকের পতন হয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এটি এ বছরের সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন। নাসডাক সূচকেরও ৪ শতাংশ পতন হয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে এটি বৃহত্তম দরপতন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে এসঅ্যান্ডপি-৫০০ শেয়ারদর ছিল রেকর্ড উচ্চতায়। সোমবার সেই তুলনায় ৮ দশকি ৬ শতাংশ কম লেনদেন নিয়ে দিন শেষ হয়। যার ফলে বাজার থেকে বের হয়ে গেছে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
অন্যদিকে, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজার নাসডাকও গত বৃহস্পতিবার সাম্প্রতিক সময়ে দরের বৃদ্ধির রেকর্ড করেছিল। কিন্তু সোমবার গত ডিসেম্বরের রেকর্ড উচ্চতার তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়ে আগাম বার্তা দিতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প। তার কাছে যুক্তরাষ্ট্র মন্দার মুখোমুখি হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেননি। কেননা বিনিয়োগকারীরা তার বাণিজ্য নীতির প্রভাবে বেশ উদ্বিগ্ন। কানাডা, মেক্সিকো এবং ইউরোপের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পাহাড়সম অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে।
শুধু মার্কিন বাজারই নয়, এশিয়ার শেয়ারবাজারেও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের উপর প্রভাব পড়েছে। মঙ্গলবারের প্রাথমিক লেনদেনে জাপানের নিক্কেই-২২৫ সূচক ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং হংকংয়ের হ্যাং সেন্ড ইনডেক্স নেমেছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। এদিকে, বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলার শেয়ারের দরপতন হয়েছে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ। এআই চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার দরপতন হয়েছে ৫ শতাংশ। দরপতন হয়েছে মেটা, অ্যামাজন এবং অ্যালফাবেটের মতো বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানেরও।
গত রোববার ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, আমি এ ধরনের ইস্যুতে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা পছন্দ করি না। আমরা একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের সম্পদ ফিরিয়ে আনছি এবং এটা অনেক বড় একটি বিষয়। তার এমন বক্তব্যের পরই শেয়ারবাজারে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।