ইতালিতে ২২ দিনে চার জন প্রবাসীর মৃত্যু, বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মার্চ ২০২৫, ৪:৩৮:১৩ অপরাহ্ন
ইসমাইল হোসেন স্বপন, ইতালি: ইতালির ছোট শহর মনফালকোনে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। সেখানে বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তবে সম্প্রতি এই শহরে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ই মার্চ পর্যন্ত ৪ জন বাংলাদেশির মৃত্যু স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুগুলোর কারণ ভিন্ন হলেও এর মধ্যে বেশ কয়েকটি রহস্যজনক বলে মনে করা হচ্ছে। কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, কেউ আবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এক মাসেরও কম সময়ে একাধিক বাংলাদেশির মৃত্যু অনেকে অস্বাভাবিক মনে করছেন।
জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে জাহাজে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ভৈরবের আমিন মিয়া( ৩৮)। তার কিছুদিন পর ২ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান মাদারীপুরের মহিউদ্দিন মজুমদার (৪৪)।
ইতালির মনফালকোনেতে বিএনপি নেতা নরসিংদীর ওমর হোসাইন ফারুক (৫০) জাহাজে কর্মরত অবস্থায় ৫ই মার্চ স্থানীয় সময় বিকাল ৩ টায় স্ট্রোক করে মারা যান। এরপর ৭ মার্চ একই শহরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ফারুক মিয়া (৪২)। তার দেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে।
মনফালকোনের বাংলাদেশি অভিবাসীরা এমন মৃত্যুর খবরে শোকাহত এবং আতঙ্কিত। স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলো এ বিষয়ে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, কর্মক্ষেত্রে চাপ, স্বাস্থ্যগত অবহেলার কারণেও এই মৃত্যুগুলো ঘটতে পারে।
একজন প্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, আমরা এখানে মূলত কাজের জন্য এসেছি, কিন্তু ২২ দিনের ব্যবধানে ৪জন বাংলাদেশির মৃত্যুতে বাংলা কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখবে।
স্থানীয় প্রশাসন এবং বাংলাদেশি দূতাবাস বিষয়টি নজরদারি করছে। ইতোমধ্যে তারা প্রবাসীদের সচেতনতা বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
প্রবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য ও কর্মপরিবেশের দিকে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা। এত কম সময়ের মধ্যে কেন এতজন মারা গেলেন? এটি নিছক কাকতালীয়, নাকি এর পেছনে আরও গভীর কোনো কারণ রয়েছে? স্থানীয় প্রশাসনকে এ ধরনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেছেন তারা।