হাবিপ্রবিতে মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদানে চ্যালেঞ্জের মুখে হল প্রশাসন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১:০২:২৪ অপরাহ্ন
মুরাদ হোসেন, হাবিপ্রবি, দিনাজপুর: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) তাজউদ্দীন আহমেদ হলে মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে হল প্রশাসন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারী) তাজউদ্দীন আহমেদ হল সুপার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়রিটি, মেধা এবং অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে সিট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদানের বিরোধিতা করেছেন হলটিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের পাওয়ার হাউস খ্যাত এই হলের শিক্ষার্থীরা গত ৪ আগস্ট হল প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পর আনুমানিক রাত দশটার দিকে একত্রিত হয়েছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, তারা সকলে মিলে একসাথে চা খাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন।
চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার কথা স্বীকার করে তাজউদ্দীন আহমেদ হল সুপার অধ্যাপক ড. মো. শোয়াইবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণভাবে হল প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এতে অভ্যস্ত না হওয়ায় মানিয়ে নিতে পারছে না। পাশাপাশি তারা হল প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে অসহযোগিতা করছে। বেশ কয়েকবার হল প্রশাসনের তরফ থেকে আবাসিক হওয়ার কথা বলা হলেও অনেক শিক্ষার্থী আবাসিক হয়নি। আবার অনেকেই বাহিরে থেকে এসে এরমধ্যে হলে উঠেছে। তারা দাবি করছে ৫ আগস্টের আগে হলে উঠেছিল। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের সিনিয়রিটি, মেধা এবং আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে সিট বরাদ্দ বাস্তবায়ন করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন, ‘তাজউদ্দীন আহমদ হলের হল সুপার মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দিয়েছেন যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বিরল। শিক্ষার্থীদেরকে মেধার ভিত্তিতে সুশৃঙ্খলভাবে হলে ওঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য স্যারকে ধন্যবাদ। তবে এখনো ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী থাকার কারণে তারা তাজউদ্দীন হলের ছাত্রদলের এক নেতার মাধ্যমে সেখানে সিন্ডিকেট তৈরি করে স্যারকে বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা বলবো এদের ব্যাপারে খুব দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে আবাসিক হলগুলোতে সিট বরাদ্দ হতো ছাত্রলীগের মাধ্যমে সিট বাণিজ্য করে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনকে অসংখ্য ধন্যবাদ যে তাজউদ্দীন আহমেদ হলে সিনিয়রটি এবং মেধার ভিত্তিতে হলে সিট বরাদ্দ করা হয়েছে। সামনেও যেন এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হলে সিনিয়রিটি, মেধা, গরিব ও অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই হলে সিট বরাদ্দ করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি শেখ রিয়াদ বলেন, ‘যারা ছাত্রশিবিরের মেসগুলোতে হামলা করেছে, হলগুলো থেকে নামিয়ে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সামনের সপ্তাহে আমরা মামলা করবো। এছাড়াও তাজউদ্দিন আহমদ হল সুপার স্যারকে যারা হুমকি দিচ্ছে বা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড আমাদের জানা আছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা একশনে যাবো ইনশাআল্লাহ।’