এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন দ্রুত সংস্কার চাইলে: ড. ইউনূস
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না, আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরো ছয় মাস সময় লাগবে।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
গত বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে ড. ইউনূসের এই বৈঠক হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কি ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে।
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন আর শুধু বাংলাদেশি তরুণ নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রজন্ম পুরনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না, তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল ও সুধীসমাজের সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।
তিনি আরো জানান, তাঁর সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। এরই মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গতি ফিরে এসেছে।
আরো অনুষ্ঠানে যোগদান : প্রধান উপদেষ্টা গতকাল সুইজারল্যান্ডে তাঁর শেষ দিনে সাতটির বেশি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শীর্ষ সম্মেলনের সময় আমেরিকান বিনিয়োগকারী রে ডালিও, মারিনো ম্যানেজমেন্ট ও ডালিও ফ্যামিলি অফিসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়া জেনেল গ্রুপের (রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল কম্পানি) নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আমের আলীরেজা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সভা এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের পার্শ্ব ইভেন্টের সময় কমপক্ষে ৪৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর চার দিনের সফর শেষ করে শুক্রবার রাতে (সুইজারল্যান্ড সময়) জুরিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে জুরিখ ত্যাগ করার কথা। তিনি ২৫ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।