হাবিপ্রবির একাডেমিক কাউন্সিল এজেন্ডায় জায়গা পায়নি শিক্ষার্থীদের সমস্যা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১:০১ অপরাহ্ন
মুরাদ হোসেন, হাবিপ্রবি, দিনাজপুর: জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রথম একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনায় ছিল না শিক্ষার্থীদের কোনো দাবি দাওয়া।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল দশটায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮ তম একাডেমিক কাউন্সিল। ছাত্র জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এটাই প্রথম একাডেমিক কাউন্সিল সভা। একাডেমিক কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করেন অভ্যুত্থান পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য প্রফেসর ড. এনামউল্যা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নবনিযুক্ত উপউপাচার্য প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলাম সিকদার, নবনিযুক্ত ট্রেজারার প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর কবির, রাস্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত ৫ জন সদস্যসহ ৬৮ জন সদস্য।
জানা যায়, ৬৮তম একাডেমিক কাউন্সিলের মূল এজেন্ডা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড গঠন, গুচ্ছে থাকা নিয়ে সিদ্ধান্ত এবং পিএইচডি ডিগ্রির গ্রাজুয়েট অনুমোদন। এছাড়াও বিভিন্ন একাডেমিক বিষয় যেমন একাডেমিক ক্যালেন্ডার ও ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিল সভায় শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থান সহ সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অতিথিদের বক্তব্যে জুলাই বিপ্লব ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন নিয়ে কথা আসলেও শিক্ষার্থীদের বিষয় নিয়ে ছিল না কোনো এজেন্ডা।
গত ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিআইপি কনফারেন্স রুমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. এনামউল্যা ও উপউপাচার্য প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলাম সিকদার এর সাথে সাক্ষাৎ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এর কাছে লিখিত আবেদনপত্র জমা দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ফি ১৫০ টাকা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা এটিকে ৮০-১০০ এর মধ্যে করতে বলেছেন। একই সাথে ইমপ্রুভ দেওয়ার ক্ষেত্রে সিজিপিএ ২.২৫ দেওয়া থাকলেও শিক্ষার্থীরা এটিকে ২.৭৫ করার দাবি জানান। সেখানে উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে বিষয়গুলো সমাধান করে দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস প্রদান করে। কিন্তু বাস্তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ৬৮তম একাডেমিক কাউন্সিলে এসব আলোচনা হয় নি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময়ের দাবি সেশনজট নিরসন, ছাত্র সংসদ চালু, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন, ২য় সমাবর্তন আয়োজন নিয়েও কোনো কথা হয় নি একাডেমিক কাউন্সিলে।
এছাড়াও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়ে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সাইফুর রহমান কতৃক বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধের নোটিশ হলেও সেটিও একাডেমিক কাউন্সিলে পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হয় নি।
এ বিষয়ে ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারে অন্তবর্তীকালীন সরকার কতৃক গঠিত শিক্ষা সংস্কার কমিশন সহ বিভিন্ন সংস্কার কমিটির কেন্দ্রীয় ভাবে যে সিদ্ধান্ত আসবে সে অনুযায়ী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপাচার্য ও উপউপাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেন নি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানাই, শিক্ষার্থীদের রক্তের বিনিময়ে পদে বসেছে বর্তমান প্রশাসন অথচ সেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে নেই তৎপরতা। তারা পদের জন্য ছোটাছুটি করছে কিন্তু যাদের জন্য তাদের এই পদ পদবী সেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ যার চিত্র ফুটে উঠেছে সদ্য একাডেমিক কাউন্সিলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সমস্যা গুলো থেকেই যাচ্ছে।