পুড়ে গেছে শত শত বাড়ি, লস এ্যাঞ্জেলসে নতুন আতংক আগুন টর্নেডো
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৮:৫০ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে লাখ লাখ মানুষের জীবন হুমকির মধ্যে পড়েছে। প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েও দাবানল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে অঞ্চলটিতে আগুন ছড়ানোর নতুন রূপ নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দাবানলদুর্গত এলাকাগুলো ‘আগুনের টর্নেডো’র ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি একটি বিরল বিষয় এবং এমন এক বিপজ্জনক অবস্থা, যেখানে দাবানল ‘নিজস্ব আবহাওয়া’ তৈরি করে থাকে।
মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করে বলেছে, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকায় বাতাসের তীব্রতা বেশি রয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ খুবই শুষ্ক। এ দুইয়ে মিলে এক বিশেষ বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এ পরিস্থিতিতে বড় আকারের নতুন দাবানল দেখা দিতে পারে। আগুন নতুন আকারে বিস্ফোরিত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ টড হল বলছেন, বর্তমান চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় শক্তিশালী টর্নেডো সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার দমকলকর্মীরাও আগুনের টর্নেডোর মুখোমুখি হতে পারে।
বুধবার পর্যন্ত চলা মার্কিন আবহাওয়ার পূর্বাভাসে টর্নেডোর কথা উল্লেখ করা হয়নি। আবহাওয়াবিদ টড হল বলছেন, চরম পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি অসম্ভব কিছু না।
ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল নিয়ে ম্যাসাচুসেটসের গবেষকরা একটি পরীক্ষাগারে ঘটনাটির একটি ছোট আকারের সংস্করণ তৈরি করার জন্য কাজ করছেন।
সান্তা বারবারার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিদ্যার অধ্যাপক লেইলা কারভালহো বলেন, অশান্ত ধোঁয়াসহ দাবানল একটি মেঘমালা তৈরি করতে পারে। এটি বজ্রপাতের মতো আগুন, ছাই বা ধোঁয়ার ঘূর্ণি তৈরি করতে পারে।
তিনি বলেন, খুব শক্তিশালী বায়ু শিয়ার (অনুভূমিক বায়ু) এবং খুব গরম নিম্নচাপ সিস্টেমের কারণে একটি ঘূর্ণন সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আগুনের টর্নেডো সৃষ্টি হলে কী হতে পারে?
অধ্যাপক কারভালহো জানান, আগুনের টর্নেডো বাতাস শুষে নিয়ে দাবানলকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। এটি একটি টর্নেডো ট্র্যাক বা গতিপথ তৈরি করে। এটি যেদিকেই যায় না কেন, অন্য টর্নেডোর মতোই বিধ্বংসী।
এর আগে, ২০১৮ সালে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উত্তরে রেডিংয়ের কাছে একটি বিশাল এবং বিধ্বংসী দাবানলে তিনটি ফুটবল মাঠের আকারের সমান একটি আগুনের টর্নেডো সৃষ্টি হয়েছিল। সেখানে লোকজন তেমন ছিল না, তবে একজন দমকলকর্মী এর কবলে পড়ে প্রাণ হারান।
বিজ্ঞানীরা পরে আগুনের টর্নেডোটিকে ‘একটি বরফে ঢাকা মেঘের’ মতো আকারের বলে বর্ণনা করেন। এটি বাতাসের সঙ্গে ৭ মাইল পর্যন্ত এগিয়েছিল এবং ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার গতিতে পর্যন্ত বাতাস সৃষ্টি করেছিল।
ওরসেস্টার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ফায়ার প্রোটেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেমস আরবান বলেন, গবেষণায় আরও দেখা গেছে, আগুনের টর্নেডোগুলো দীর্ঘ দূরত্বে বায়ুবাহিত অঙ্গার বহন করতে পারে। এগুলো দিক পরিবর্তন করে ভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যেতে পারে।