কপ-২৯: ৩০০ বিলিয়ন ডলার দিতে রাজি ধনী দেশগুলো
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫:৪২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকিতে থাকা উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশ ও দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর জন্য বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিতে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের ধনী দেশগুলো। তবে এই অর্থায়নের পরিমাণকে যথেষ্ট নয় বরং লজ্জাজনক বলে দাবি করেছেন সমালোচকরা। কপ-২৯-কে একটি ব্যর্থ সম্মেলন বলে দাবি করেছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
গতকাল বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন কপ-২৯-র শেষদিন ছিল শুক্রবার। শেষদিনে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বড় অর্থনীতির দেশগুলো জলবায়ু সংকট নিরসনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২৫০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছিল। কিন্তু সম্মেলনে অংশ নেওয়া ছোট অর্থনীতির দেশগুলো এই প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছে। জলবায়ু সংকট নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো এই অঙ্ককে লজ্জাজনক ও আপত্তিকর বলে মন্তব্য করে। পানামার প্রতিনিধি হুয়ান কার্লোস মন্টেরি গোমেজ গার্ডিয়ানকে বলেন, এটা কোনোভাবেই যথেষ্ট না। আমাদের বছরে অন্তত ৫ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমরা চেয়েছি ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক জিডিপির মাত্র এক শতাংশ।
অর্থায়ন নিয়ে সমঝোতা না হওয়া সম্মেলন গতকাল শনিবার অতিরিক্ত দিনে গড়ায়। উন্নয়নশীল ও স্বল্প উন্নত দেশগুলোর সমালোচনার মুখে সাহায্যের পরিমাণ নিয়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সম্মত হয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো। গার্ডিয়ানের এক খবরে বলা হয়েছে, রুদ্ধদ্বার আলোচনার ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবে সম্মত হয়। তবে জাপান, সুইজারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড এর বিরোধিতা করে। ৩০০ বিলিয়নের এই প্রস্তাবেও সম্মতি দেয়নি উন্নয়নশীল দেশগুলো। ছোট দ্বীপপুঞ্জ রাষ্ট্রগুলো ও স্বল্প উন্নত দেশগুলোকে নিয়ে গড়া দুটি সংগঠন গতকালই আলোচনা বর্জন করেছে। তারপরও শেষ মুহূর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে আলোচনা চলছে। পানামার প্রধান আলোচক হুয়ান কার্লোস মন্টেরি গোমেজ বলেন, এখানে সামনের পথের কোনো স্পষ্টতা নেই। অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার মতো রাজনৈতিক ইচ্ছার বিষয়েও কোনো স্পষ্টতা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক দূত জন পডেস্টা জানিয়েছেন, একটি সমঝোতার দিকে অগ্রসর হতে আলোচনায় অগ্রগতি হবে। তার মতে, এটি শান্ত অবস্থার আগের ঝড়।
এদিকে এবারের কপ সম্মেলনকে ব্যর্থ ঘোষণা করে পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা ভয়াবহ। যদিও এ নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা নেই বললেই চলে, কিন্তু এরপরও এরকম ধারাবাহিক বিশ্বাসঘাতকতার জবাবে ক্ষোভ ছাড়া কিছু প্রদর্শন করতে পারব না। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা আবারও জলবায়ু সংকটের প্রভাবিত হতে যাওয়া অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিতে সম্মত হচ্ছে। তারা সব ভুয়া সমাধান ও ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলোর যে জলবায়ু ঋণ, তা পরিশোধের কোনো চেষ্টাই করছে না তারা।